ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রোগীর খাবার যেমন হবে
শামসুন নাহার তাহিরা, পুষ্টিবিদ
বর্তমানে ডায়াবেটিস অতি সুপরিচিত একটি রোগ। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। বর্তমানে বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৪ কোটিরও বেশি। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি।
শরীরে যখন রক্তের সব চিনিকে (গ্লুকোজ) ভাঙতে ব্যর্থ হয়, তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। ডায়াবেটিসকে সব রোগের মা বলা হয়। কেননা, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর অন্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: কিডনিতে পাথর জমেছে কি না বুঝে নিন পেটের ৫ লক্ষণে
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া হার্টের রোগ, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, চর্মরোগ ও পায়ের আলসার বা পায়ের বিভিন্ন রোগ হতে পারে।
ডায়াবেটিসের ব্যাপকতা ও জটিলতার বিষয় মাথায় রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রথমেই ডায়েটে পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়। পরিমিত খাবার ও নিয়ন্ত্রিত পথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যা যা রাখতে হবে-
আরও পড়ুন: কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে যে ৩ লক্ষণ বেশি দেখা যাচ্ছে
>> শর্করাজাতীয় খাবার হবে প্রতিদিনের খাবারের ৪৫-৫৫ শতাংশ। এটি ধীরে ধীরে শোষিত হয় এমন শর্করা থেকে গ্রহণ করা ভালো। এতে দেহে দ্রুত শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় না। এমন শর্করা হলো- লাল চাল, লাল আটা।
>> প্রতিদিনের খাবারের ২০-২৫ শতাংশ আমিষজাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। যেমন- ডিম, চর্বি ছাড়া মুরগির মাংস, ননী ছাড়া দুধ ও মাছ।
>> ফ্যাটজাতীয় খাবারের মধ্যে অসম্পৃক্ত চর্বি ওমেগা ৩ থেকে গ্রহণ করা ভালো (বাদাম, সামুদ্রিক মাছ)।
>> প্রতিদিন রান্না করলে পানি ছাড়ে এই ধরনের সবজি খেতে পারবেন ইচ্ছেমতো।
>> প্রতিদিন ফল খেতে হবে। বিশেষত দেশি টকজাতীয় ফল (আমড়া, জাম্বুরা, পেয়ারা, আমলকি) খাওয়া ভালো।
আরও পড়ুন: সাধারণ কাশি নাকি কোভিডের লক্ষণ বুঝবেন যেভাবে
পরিমিত পরিমাণ বা যা খাওয়া বাদ দিতে হবে
>> সাদা চাল,আটা, নুডলস, পাস্তা ইত্যাদি পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
>> ঘি, মাখন, ডালডা খাওয়া যাবে না।
>> চর্বিযুক্ত মাংস না খাওয়াই ভালো।
>> চিনি, মিষ্টি, মধু, খেজুর, কোমল পানীয় খাওয়া যাবে না।
>> চা, কফি, অ্যালকোহল পান করা যাবে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম মেনে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি খাবারও সময়মতো খেতে হবে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ বার খাবেন।
পরিমিত পরিমাণে খাবার সকালের নাশতা থেকে রাতের শোয়ার আগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা অন্তর খাবেন। ডায়াবেটিস দূর করা না গেলেও একে নিয়ন্ত্রণে রাখা অসম্ভব নয়।
জেএমএস/জেআইএম