ভিডিও EN
  1. Home/
  2. লাইফস্টাইল

বারবার হেঁচকি ওঠা কঠিন কোনো রোগের ইঙ্গিত নয় তো?

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:০৭ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

হেঁচকি ওঠার সমস্যা খুবই সাধারণ। তবে একটানা হেঁচকি ওঠা বেশ যন্ত্রণাদায়কও বটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হলো একটি প্রতিবর্ত ক্রিয়া। সাধারণ কারণে এমনকি শরীরের অনেক রোগেরও সংকেত দেয় হেঁচকি।

এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কী কী কারণে হেঁচকি ওঠে ও এটি কোন কোন সমস্যার ইঙ্গিত দেয়-

হেঁচকি কেন ওঠে?

শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মধ্যচ্ছদা পেশী। মধ্যচ্ছদা দেহের ভেতরের একটি পর্দা, যা বক্ষ গহ্বর থেকে উদর গহ্বরকে পৃথক করে রেখেছে। এই পর্দা ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক মাংসপেশী দিয়ে তৈরি।

এর উপরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস, নিচের দিকে থাকা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার, পাকস্থলী ও প্লীহা। এই অঙ্গগুলোর মধ্যে কোনোটিতে যদি সমস্যা দেখা যায় তাহলে তা ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা পেশীকে বিরক্ত করে। এর ফলে হেঁচকি ওঠে।

কী কী কারণে হেঁচকি ওঠে?

পাকস্থলীতে হাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে

অনেক সময় অনেকক্ষণ না খাওয়ার জন্য পাকস্থলীতে হাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। পাকস্থলী যদি হাওয়ায় বেশি ফুলে যায়, তাহলে পাকস্থলীর উপর অংশ ডায়াফ্রামকে বিরক্ত করে। এর ফলে হেঁচকি ওঠে।

বেশি মসলাদার ও ঝাল খাবার খেলে

বেশি মসলাদার ও ঝাল খাবার খেলেও ডায়াফ্রামকে একইভাবে বিরক্ত করতে পারে। এর ফলে হেঁচকি ওঠে । ধরুন কেউ হঠাৎ করে যদি অনেকগুলো কাঁচা মরিচ খেয়ে ফেলেন তাহলেও হেঁচকি উঠতে পারে। অতিরিক্ত মসলাদার খাবারেও একই সমস্যা হতে পারে।

পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে

আলসারের সমস্যার কারণেও হেঁচকি উঠতে পারে। আবার কারো ক্ষেত্রে লিভার বড় হলে জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতো সমস্যা হলে হেঁচকি উঠতে পারে। আবার প্লীহা বড় হয়ে গেলেও হেঁচকি উঠতে পারে।

প্লীহা বড় হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড’সহ বেশ কিছু ব্যাধি। হেমাটোলজিকেল ব্যাধিতেও প্লীহা বড় হতে পারে।

ঠাৎ প্লীহা বড় হয়ে গেলে তা ডায়াফ্রামকে বিরক্ত করে। ফলে হেঁচকি উঠতে পারে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু হলেও হঠাৎ করে প্লীহা বড় হয়। তার ফলে হেঁচকি উঠতে পারে।

ফুসফুসে পানি জমলে

কোনো কারণে ফুসফুসে পানি জমলে তা ডায়াফ্রামকে বিরক্ত করে। ফলে হেঁচকি ওঠে লাগাতার। আবার কারও যদি পেরিকার্ডিয়ামে পানি জমে বা পেরি কার্ডাইটিস হয় তাহলে তা হেঁচকির কারণ হতে পারে।

ডেঙ্গুর মতো অসুখে পেরি কার্ডাইটিস হয়। আবার অনেক ভাইরাল ইনফেকশন থেকে পেরি কার্ডাইটিস হতে পারে।

হার্টের সমস্যায়

অনেক সময় হার্টের বিভিন্ন সমস্যাতেও হেঁচকি উঠতে দেখা যায় । যেমন কোনো সময় হার্ট রেট বেড়ে গেলে হেঁচকি ওঠে। জানলে অবাক হবেন, হার্ট অ্যাটাকের একমাত্র লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় হেঁচকি।

বিশেষত হার্টের নিচের দিকে দেওয়াল যা সরাসরি ডায়াফ্রামের সংস্পর্শে আসে সেখানে যদি কোনো অ্যাটাক হয় তাহলে তার লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে হেঁচকি।

অনেক সময় দেখা যায়, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হিসেবে বুকে ব্যথা হলো না কিন্তু হেঁচকি উঠলো। সাবধান থাকতে হবে। এগুলো মূলত স্থানীয় কারণ। এছাড়া কোনো কারণে যদি ভেগাস নার্ভস্টিম্যুলেটেড হয়ে যায় তাহলেও এই সমস্যা হতে পারে।

গলায় কোনো ইরিটেশন হলে অনেক সময় হেঁচকি উঠতে পারে। এছাড়া এই নার্ভ তৈরি হয় মস্তিষ্কে যে অংশ থেকে (মেডালা) সেখানে কোনো রকম স্ট্রোক, হ্যামারেজ বা চোট হলেও হেঁচকি উঠতে পারে।

সেই হেঁচকি ভয়াবহ হতে পারে। মেডালায় কোনো সমস্যা থেকে মৃত্যুও হতে পারে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও হতে পারে।

অনেক সময় জন্মগত কারণেও কারো বারবার হেঁচকি উঠতে পারে। অনেক সময় কিডনির অসুখেও, বিশেষত ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলে হেঁচকি উঠতে পারে।

সূত্র: এবিপি

জেএমএস/এমএস

আরও পড়ুন