ভিডিও EN
  1. Home/
  2. লাইফস্টাইল

শীতে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা, কারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:৩৩ এএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

শীতে রোগব্যাধি বেড়ে যায়। এ সময় জ্বর-সর্দি-কাশি যেমন বাড়ে, তেমনই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। যদিও এ বিষেয়ে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অনেক বিশেষজ্ঞরাই ধারণা করেন, হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন প্রভাব ফেলে হৃদযন্ত্রের উপর।

বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে, শীতে হার্ট অ্যাটাক ছাড়াও হার্টের অন্যান্য সমস্যাসহ স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। এর সম্ভাব্য কারণ হলো শীতে শরীরে স্নায়ুব্যবস্থার ‘সিমপ্যাথেটিক অ্যাক্টিভেশন’ বেড়ে যায়। তাই রক্তনালী সঙ্কুচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। একে বলে ‘ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন’।

এমনটি ঘটলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই পুরো শরীরে রক্ত সরবারহ করতে হৃদ্যন্ত্র দ্বিগুণ গতিতে কাজ করে। বাইরের তাপমাত্রা অনেকটা কমলে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে অসুবিধা হয়।

তাতে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে যাকে হৃদ্যন্ত্রের রক্তনালির ক্ষতি হয়। যাদের এমনিতেই হৃদরোগ আছে, তাদের শরীর এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়। শীতে আবার শরীরের অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়়ে যায়।

অন্যদিকে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশনের জন্য এমনিতেই রক্তনালী সরু হয়ে যায়। তাই হৃদযন্ত্রে কম অক্সিজেন পৌঁছায়। এতেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

শীতে আরও কয়েকটি কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন- ঠান্ডা পড়লে সবাই ঘরেই বেশি থাকেন। এ সময় হাঁটাচলা বা শরীরচর্চা করার ইচ্ছা কমে যায়।

তার উপর খাদ্যাভ্যাসেও বদল আসে। এমন খাবার খাওয়া বেশি হয়ে যায় যা শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাস্থ্যের উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয় নানা দিক থেকেই।

কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঋতুগত নিদর্শনগুলোর উপর একটি পর্যালোচনা নিবন্ধে দেখা গেছে, তাপমাত্রা, ভিটামিন ডি, সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, জমাট বাঁধার কারণ, হরমোন, বায়ু দূষণ, সংক্রমণ, বয়স, লিঙ্গ, খাদ্য ও স্থূলতা ঋতু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের পরিবর্তনশীলতা।

নিবন্ধে ১২টি কার্ডিওভাসকুলার রোগ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে- ডিপ ভেনাস থ্রম্বোসিস, পালমোনারি এমবোলিজম, অর্টিক ডিসেকশন, স্ট্রোক, ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ, হাইপারটেনশন, হার্ট ফেইলিওর, এনজাইনা পেক্টোরিস, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ, ভেন্ট্রিকুলার অ্যারিথমিয়া ও ফাইব্রিল অ্যারিথমিয়া।

পর্যালোচনা পত্রে দেখা গেছে, ঋতু ও হৃদরোগের মধ্যকার সম্পর্ক আছে, যদিও সেটি পরিষ্কার নয়। তবে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব পাওয়া গেছে, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতে হৃদরোগের বিকাশ বেশি হয়। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে এটি বেশি ঘটে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস আছে তাদের উচিত শীতে সতর্ক থাকা। কারণ তারা হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকি আছেন।

এছাড়া যাদের হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস আছে ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা তামাক সেবন করেন তাদেরও এ সময় সতর্ক থাকতে হবে।

কীভাবে ঝুঁকি কমাবেন?

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, যাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি তাদের উচিত নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিরতি ছাড়া ওষুধ খাওয়া।

বিশেষ করে যদি তাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ইতিহাস থাকে, তাদের অবশ্যই নিয়মিত মেডিকেল ফলো আপে করতে হবে। যাদের হার্টের জটিলতা আছে তাদের জন্য নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ অপরিহার্য।

এছাড়া শীতের এ সময় ডায়েটের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় সবার মধ্যেই। বিশেষ মিষ্টি খাবার।

এমনকি হৃদরোগ এড়াতে পিজ্জা ও বার্গারের মতো ফাস্টফুড খাবারের পরিবর্তে তাজা ফল ও শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া খাদ্যতালিকায় বাদাম ও অন্যান্য শুকনো ফল অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন