পায়ের পেশিতে টান বা অবশ ধরা যে রোগের আগাম লক্ষণ
ঘুমের মধ্যে কিংবা সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই পায়ের যন্ত্রণায় কাতরান! কারও হয়তো পায়ে ধরে ঝিঁ ঝিঁ বা অবশভাব আবার কেউ কেউ কষ্ট পান পায়ের পেশিতে টান ধরার সমস্যায়।
তবে বেশিরভাগ মানুষই এ ধরনের সমস্যাকে সাধারণ ভেবে অবহেলা করেন। জানলে অবাক হবেন, এ ধরনের সমস্যা কিন্তু উচ্চ কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত দেয়।
উচ্চ কোলেস্টেরল নীরব ঘাতক হিসেবেও বিবেচিত। যদি সময়মতো এটি শনাক্ত ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া না হয় তাহলে এটি হৃদরোগের কারণ হতে পারে। যদিও এর লক্ষণ তেমন প্রকাশ পায় না, আর পেলেও অনেকে তা সাধারণ ভেবে অবহেলা করেন। ফলে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।
যখন রক্তে অত্যধিক কোলেস্টেরল জমে, তখন তা ধমনীতে জমা হয়। ফলে কিছু লক্ষণ অবশ্য প্রকাশ পায় শরীরে, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। এ রকম এক লক্ষণ দেখা দেয় পায়ে।
উচ্চ কোলেস্টেরল ও পেরিফেরাল ধমনী রোগ
উচ্চ কোলেস্টেরলের সঠিক চিকিৎসা করা না হলে ধমনীতে প্লাক তৈরি হয়। প্লাক কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত পদার্থ থেকে তৈরি হয়। এটি ধমনীর পথ সরু করে দেয়।
ফলে সংকুচিত রক্তনালি দিয়ে রক্ত চলাচল করতে পারে না স্বাভাবিকভাবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে পায়ে এক লক্ষণ দেখা যায়। একে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (পিএডি) বলা হয়।
পায়ের পেশিতে টান ধরা বা ক্র্যাম্প পেরিফেরাল ধমনী রোগের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। খুবই অস্বস্তিকর ও বেদনাদায়ক হতে পারে এই সমস্যা। পিএডি’র সমস্যা সক্রিয় থাকাকালীনই বেশি ঘটে।
আবার বিশ্রামের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। ধমনীতে প্লাক জমার কারণে রক্ত প্রবাহের সমস্যার কারণে পায়ে ক্র্যাম্পের ঘটনা ঘটে।
পিএডি’র লক্ষণ কী কী?
যদিও পায়ে ব্যথা বা অস্বস্তি একাধিক কারণে হতে পারে। তবে প্রায়ই পায়ে ব্যথা পিএডি’র সঙ্গে সম্পর্কিত, যদি এই ব্যথা কোনো কাজের সময় বাড়ে তাহলে বুঝবেন আপনি পিএপি’তে ভুগছেন।
এছাড়া পায়ে অসাড়তা, দুর্বলতা, ভারী বা ক্লান্ত বোধ করার লক্ষণও হতে পারে পিএডি’র। যদিও পায়ের নিচের অংশেই পিটএডি’র ব্যথা বেশি হয়, তবে মাঝে মধ্যে এই ব্যথা হাঁটু কিংবা উরু পর্যন্তও পৌঁছাতে পারে।
পায়ে যন্ত্রণা বা ক্র্যাম্প ছাড়াও পিএডির কারণে বিশ্রামের সময় পায়ের আঙুলে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে রাতে শুয়ে থাকার সময় এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
পিএডি’র অন্যান্য উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে- পায়ে ঠান্ডা অনুভূতি, লালচেভাব, পায়ের রং পরিবর্তন, ঘন ঘন পায়ে সংক্রমণ বা পায়ের আঙুলে ঘা, যা সহজে নিরাময় হয় না।
এসব লক্ষণ দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন দ্রুত। উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে খাদ্যতালিকা থেকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বাদ দিন ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এমএস