চিকেন পক্স দ্রুত সারাতে যা করবেন ও যা খাবেন
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে চিকেন পক্স বা জলবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই। চিকেন পক্স ভ্যারিসেলা ভাইরাসের কারণে হওয়া একটি ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত চিকেন পক্সে আক্রান্ত হওয়ার ১০-২১ দিনের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
চিকেন পক্সের কারণে শরীরে ছোট ছোট লালচে তরলযুক্ত ফোসকা ওঠ। এর সঙ্গে দেখা দেয় মাথাব্যথা আর জ্বর। রোগীর শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। চিকেন পক্সের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এর লালচে ফোসকার সঙ্গে মারাত্মক চুলকানি।
ফলে ফোসকা ফেটে গেলে তা থেকে আরও বেশি মাত্রায় ফুসকুড়ির মতো উঠতে শুরু করে। তবে সতর্ক থাকলে তেমন কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ঘরোয়া যত্নেই রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। চিকেন পক্স থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
>> এ সময় রোগীর শরীর ঠান্ডা রাখা উচিত। তাই গোসল করা জরুরি। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে কখনো গোসল করবেন না।
>> নিম পাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে বেশি উপকার মিলবে। নিমের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান পক্স নির্মূল করতে সাহায্য করে।
>> এসময় বারবার জ্বর হতে পারে। তাই প্রাপ্তবয়স্করা প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে ছোটদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকরে পরামর্শ নিন।
>> প্রতিদিন দু’বেলা করে জামা-কাপড় বদলানো উচিত। তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। সুতি ছাড়া অন্য কাপড়ের পোশাক পরবেন না, তাতে চুলকানি বা অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে।
>> পক্সে চুলকানি হলে কখনো নখ লাগাবেন না। এতে ত্বকে স্থায়ীভাবে পক্সের দাগ থেকে যেতে পারে। আবার তা থেকে সংক্রমণও ছড়াতে পারে। তাই শিশুদের শরীরে পক্স হলে তাদের নখ ছোট করে কেটে দিন।
>> চুলকানি কমাতে অলিভ অয়েল বা ক্যালামাইন লোশন লাগান, আরাম পাবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খান ও পক্সের ওপর অ্যান্টিবায়োটিক মলমও লাগাতে পারেন।
চিকেন পক্স হলে কোন খাবার খাবার আর কোনটি নয়?
>> চর্বিজাতীয় খাবার যেমন- মাখন, তেল, বাদাম, পনির, নারকেল বা চকলেট জাতীয় খাবারে অতিরিক্ত ফ্যাট থাকে, যা পক্সের প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে।
>> অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাবার খাবেন না। আর বসন্ত হলে মুখের ভেতরেও ক্ষত সৃষ্টি হয়, এতে ঝাল লাগলেই প্রদাহ বেড়ে যাবে।
>> আখরোট, চিনাবাদাম, কিসমিশের মতো খাবার অর্গিনিন নামে এক প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা চিকেন পক্সের জীবাণুর বংশবিস্তার করে। এমনিতে এই অ্যাসিড শরীরের পক্ষে ভালো হলেও বসন্তের সময় তা একেবারেই খাবেন না।
>> এ সময় রোগীকে বেশি ক্যালোরি, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। তবে মুখে স্বাদ আনতে পাতলা স্যুপও খাওয়াতে পারেন রোগীকে।
>> ইলিশ-চিংড়িজাতীয় মাছ ছাড়া যে কোনো মাছের পাতলা ঝোল আর ভাতও খেতে পারবে রোগী। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
>> এ সময়ে ডাল খাওয়া খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডালের পানি যদি চুমুক দিয়ে খাওয়ানো যায়, তাহলে শরীর খুব ঠান্ডা থাকে।
>> এ সময়ে রোগীকে ফলের রসও খাওয়াতে পারেন, এটি শরীরে পুষ্টি যোগাবে। তবে লেবুর রস খাওয়া যাবে না। কারণ এতে থাকে উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরে ক্ষতস্থানে জ্বালা-যন্ত্রণার কারণ হতে পারে।
সূত্র: দাসবাস/ওয়েবএমডি
জেএমএস/এমএস