পিৎজা, বার্গার, আইসক্রিম কেন সবার এতো পছন্দের?
বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যকর খাবারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি পছন্দ করেন? এর পেছনের আসল কারণ কী, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
ডায়েটিশিয়ান ও হেলদি স্টেডি গো’র সিও প্রতিষ্ঠাতা কাজল ও বুশরার মতে, আমাদের কিছু খাবার পছন্দ করা ও ঘৃণার পেছনেও আছে বৈজ্ঞানিক কারণ।
অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার কখনো সুস্বাদু ও মুখোরোচক হয় না! তবে আপনি হয়তো জানেন না, প্রতি ৫-৬ বছর পরপর মানুষের মুখের স্বাদেও আসে পরিবর্তন।
জাঙ্ক ফুড সুস্বাদু হলেও তা কখনো স্বাস্থ্যকর নয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কী কী কারণে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি টান বাড়ে-
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
অনেকেই ঘুমকে দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে দেখেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রয়োজনের চেয়ে কম ঘুমালে বেশি তৃষ্ণা ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণও বাড়ে।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, যারা ৯ ঘণ্টার মধ্যে ৪ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের মধ্যে তুলনা করে দেখা গেছে যারা কম ঘুমায় তারা শাকসবজি কিংবা টকদইয়ের তুলনায় আইসক্রিম ও পিজ্জার ছবি দেখে বেশি লোভ করে।
আসলে কম ঘুমের কারণে শরীরের সব সিস্টেমে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে আরাম করতে ইচ্ছে করে, শরীর অলস হয়ে যায় ও আজেবাজে খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
খুব বেশি চাপ
মানসিক চাপের কারণে ‘কর্টিসল’ নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয়। ফলে শর্করার ও চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে একজনকে ভাল বোধ করতে চর্বি ও শর্করা খাবার আরাম দেয়। ফলে শরীর এই জাতীয় খাবারের জন্য আরও বেশি আকাঙ্ক্ষা করে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, চিনি মস্তিষ্কে কর্টিসলের পরিমাণ কমায়। যা মেজাজ শান্ত রাখতে সাহায্য করে। তবে তা শরীরের জন্য হতে পারে ক্ষতির কারণ। এজন্য খুক বেশি মানসিক চাপে থাকলে মেডিটেশন করুন।
দ্রুত খাওয়া
খাবার অন্তত ৩২ বার চিবিয়ে খেতে বলা হয় কেন, তা কি আপনার জানা আছে? তবে কেউই মানেন না এই পরামর্শ। কারণ সবাই এখন দ্রুত খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন।
আসলে খুব তাড়াতাড়ি খাওয়া অন্ত্র ও মস্তিষ্কের মধ্যে ভুল যোগাযোগ তৈরি করে, ফলে মস্তিষ্কে তৃপ্তির সংকেত পৌঁছায় দেরিতে। যা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণ হতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় যারা ভোগেন তাদের মধ্যেও জাঙ্ক ফুডের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। লেপটিন ও সেরোটোনিনের মতো হরমোন যা অন্ত্র ও মস্তিষ্কের মধ্যে সমন্বয়ের সঙ্গে জড়িত তা অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি ও প্রোটিন গ্রহণ না করা
পর্যাপ্ত পানি পান না করা বা খাবারে প্রোটিনের অভাব হলে ক্ষুধার যন্ত্রণা আরও বাড়ে, ফলে আশপাশে থাকা সব ধরনের অস্বাস্থ্যকর জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
পুষ্টির ঘাটতি
শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতিও নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি লোভের সৃষ্টি করতে পারে। যেমন- ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি চকলেট, বাদাম বা মটরশুটি খাওয়ার ইচ্ছে বাড়ায়।
অন্যদিকে ফসফরাসের ঘাটতি চিনি বা মিষ্টি খাবারের লালসা বাড়ায়। সোডিয়ামের ঘাটতি চিপসের মতো নোনতা খাবারের আকাঙ্ক্ষা বাড়ায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জেআইএম