বিশ্বের ১৪৪ মিলিয়ন মানুষ ভুগছেন ‘লং কোভিডে’, জানুন উপসর্গ

কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠলেও বর্তমানে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা বা ‘লং কোভিডে’ ভুগছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এ বিষয়কে ‘উদ্বেগজনক’ বলে বিবেচনা করছেন।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) লং কোভিডকে কোভিড-১৯-এর পরবর্তী অবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে তখন বলা হয়, ‘যদিও বেশিরভাগ রোগীই কোভিড ১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তবে পরবর্তী সময়ে আবার অনেকেই ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, বিভ্রান্তি, ভুলে যাওয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। কেউ কেউ আবার করোনা সংক্রমণের পর থেকে মানসিক সমস্যাতেও ভুগছেন’।
বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বের প্রায় ১০-২০ শতাংশ মানুষ যারা কোভিড থেকে সেরে উঠলেও এখনো ভুগছেন লং কোভিডে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
আসলে লং কোভিডের লক্ষণগুলো মূল সংক্রমণের পরে কয়েক সপ্তাহ, মাস ও বছর ধরে ব্যক্তির মধ্যে থাকে। এক প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে প্রায় ১৪৪ মিলিয়ন মানুষ লং কোভিডে ভুগছেন।
লং কোভিডের লক্ষণ কী কী?
বিজ্ঞাপন
কোভিড সংক্রমণের পরে রোগীদের মধ্যে যে সাধারণ লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হলো- ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, স্মৃতিশক্তিতে সমস্যা, মনোযোগের অভাব, ঘুমের সমস্যা, ক্রমাগত কাশি, বুকে ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা, পেশিতে ব্যথা, গন্ধ ও স্বাদ হারানো, বিষণ্নতা, উদ্বেগ, জ্বর ইত্যাদি।
তবে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর ব্রেইন ফগ বা মস্তিষ্কের কুয়াশায় ভোগা লং কোভিডের একটি সাধারণ লক্ষণ। এটা মানসিকভাবে ব্যক্তিকে অস্পষ্ট করে তোলে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড থাকার দুই বছর পরেও মানুষের মধ্যে মস্তিষ্কের কুয়াশা, ডিমেনশিয়া ও মৃগীরোগ বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এই গবেষণায় প্রায় ১.২৫ মিলিয়ন মানুষ অংশ নেন। তাদের বেশিরভাগই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। রোগীদের ১৪টি রোগের জন্য ২ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। অতঃপর দেখা যায় ১৯-৬৪ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের বেশিরভাগই ভুগছেন ব্রেইন ফগে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণার প্রধান লেখক অধ্যাপক পল হ্যারিসন বিবিসিকে জানান, লং কোভিড এখন উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। কোভিড সংক্রমণের দুই বছর পরেও অনেকের মধ্যেই ডিমেনশিয়া পাওয়া যাচ্ছে।’
যদিও ওমিক্রন ডেল্টার তুলনায় কম গুরুতর, তবুও এটি মস্তিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থার একই ঝুঁকির দিকে নিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়।
বিজ্ঞাপন
লং কোভিড মেকাবিলায় করণীয়
লং কোভিড মোকাবেলা করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল স্ব-ব্যবস্থাপনা। ২০২২ সালের জানুরিতে ল্যানসেটের এক রিপোর্টে লং কোভিডে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের স্ব-ব্যবস্থাপনার বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, লং কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উচিত পুনরায় সংক্রমণ ও উপসর্গমুক্ত থাকতে ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ, প্রতিকার, পরিপূরক, অন্যান্য থেরাপি ও খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন আনা।
বিজ্ঞাপন
মোটকথা জীবনযাত্রার মান ও কাজের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর মাধ্যমে লং কোভিডের গুরতর লক্ষণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। এর পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেল চলতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জেআইএম
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন