যমজ সন্তানের সম্ভাবনা আছে কি না জানাবে যে লক্ষণ
যমজ সন্তান গর্ভে ধারণ করার বিষয়টি সত্যিই অবাক করার মতো। চাইলেই তো আর যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া যায় না। অনেকেই যমজ সন্তান চান। হয়তো দুটি বাচ্চার আকাঙ্খা কিংবা দুবার গর্ভধারণের ঝক্কি নিতে না চাওয়া।
যমজ সন্তান মূলত দু’রকম হয়। প্রথমটি হলো আইডেন্টিকাল টুইন বা মনোজাইগটিক টুইন। এমন যমজরা দেখতে হুবহু একই রকম এমনকি আচার ব্যবহারেও এদের খুব মিল থাকে তাদের।
এ ধরনের যমজ শিশুরা জন্মায় যখন একটি ডিম্বাণু একটি শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত হওয়ার পর ভেঙে গিয়ে দুটি ভ্রূণে পরিণত হয়। একই প্লাসেন্টার মধ্যে একই তরলের মাঝে ভেসে ভেসে তারা বড় হয়।
পরপর যে দুটি পাতলা পর্দার মতো আবরণের মাঝে তারা নিরাপদ থাকে, কখনো সেই দুটিও থাকে এক। কখনো একটি আলাদা হয়। এসব কারণেই তাদের চেহারা ছবি ও আচরণ একই রকম হয়।
আরেক ধরনের যমজ আছে, যাদেরকে বলা হয় ফ্র্যাটেরনাল টুইন বা ডাইজাইগোটিভ টুইন। চেহারা ও স্বভাবে সম্পূর্ণ বিপরীধর্মী যমজ সন্তানও জন্মায় কখনো। তারা জন্মায় দুটি আলাদা ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনে। তারা বড় হয় আলাদা প্লাসেন্টার মাঝে।
তাদের অ্যমনিওটিক স্যাক, কোরিয়নিক স্যাক নামের নিরাপত্তামূলক আবরণগুলোও ভিন্ন হয়। ফলে তাদের মধ্যে মিল বা অমিল থাকতে পারে।
এবার জেনে নিন কী কী কারণে যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়ে-
>> মায়ের পরিবারে কারও যদি যমজ সন্তান থাকে তাহলে ফ্র্যাটারনিটি টুইন জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়ে। আবার বাবার দিক থেকেও যদি কারও থাকে সেক্ষেত্রে আইডেন্টিকাল টুইন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
>> মায়ের বয়স বাড়লে যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনাও বাড়ে। বিশেষ করে ৩৫ বছরের পরে হলে। এ সময় মায়ের শরীরে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে।
ফলে মাসিকের পর একটির বদলে একাধিক ডিম্বাণু বের হতে পারে। আর স্বাভাবিকভাবে যত বেশি ডিম্বাণু, তত বেশি সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা। দুটো তো বটেই, কখনো কখনো তিনটি সন্তানও জন্ম নিতে পারে।
>> যেসব নারীরা বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা করাচ্ছেন তাদের মধ্যেও যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ চিকিৎসায় যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা প্রতি সাইকেলে ডিম্বাণুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
ফলে কোন ধরনের চিকিৎসা করাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে দুটো আবার কখনো তিনটি যমজ সন্তানও জন্ম নিতে পারে।
>> লম্বা ও বেশি ওজনের নারীদের মধ্যেও যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা আছে। গবেষণা বলছে, ৫ ফিট ৪ ইঞ্চির বেশি উচ্চতার অধিকারী নারীদের ক্ষেত্রে যমজ সন্তানের সম্ভাবনা বেশি। এমনকি যাদের ওজন বেশি তাদের ক্ষেত্রেও এই সম্ভাবনা বেশি।
>> ২০০৬ সালের এক গবেষণা বলছে, বুকের দুধ খাওয়ানো নারীদের ক্ষেত্রেও যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, অন্যদের তুলনায় স্তন্যপান করানোর নারীদের যমজের সম্ভাবনা ছিল ১১ শতাংশ বেশি।
সূত্র: ফ্যামিলি এডুকেশন/ভেরিওয়েল ফ্যামিলি
জেএমএস/জেআইএম