পাইলসের সমস্যা চিরতরে সারবে যে নিয়ম মানলে
পাইলসের সমস্যায় অনেকেই কষ্ট পান। এটি গুরুতর রোগ হলেও অনেকেই অবহেলা করেন। যদি প্রথমদিকেই পাইলসের সমস্যায় চিকিৎসা নেওয়া হয়, তাহলে পরে আর যন্ত্রণা পোহাতে হয় না কিংবা অস্ত্রোপচারের জন্য ছুরি-কাঁচির তলায়ও যেতে হয় না।
পাইলস কেন হয়?
এ বিষয়ে ভারতের কলকাতার ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানান, পায়ুদ্বারের ভেতরে অনেক শিরা থাকে। দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেই শিরা সাধারণত ফুলে যায়।
তারপর ওই স্থান শক্ত হয়ে একটা সময়ের পর তা ছিঁড়ে যায়। আর রক্তনালি ছিঁড়ে গেলে তো রক্তপাত হবেই। এ সমস্যারই নাম পাইলস বা হেমোরয়েডস।
এই চিকিৎসক আরও জানান, রক্তপাতই এ অসুখের প্রধান ও অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত মলত্যাগের সঙ্গেই রক্তপাত হতে থাকে। এ ছাড়া ব্যথাও হয় অনেকের। তবে সবারই যে অসহ্য যন্ত্রণা হয় তা কিন্তু নয়। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ ধরা পড়লে সহজেই সমস্যার সমাধান করা যায়।
পাইলস রোগ সারাতে করণীয়
চিকিৎসকের মতে, প্রথমেই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে যেতে হবে। কনস্টিপেশন কমাতে পারলেই এ সমস্যা কমবে। আর ঘরোয়া উপায়ে পাইলসের সমস্যার সমাধান করতে কয়েকটি নিয়ম মানতে হবে। সেগুলো হলো-
>> ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানান, কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে পাইলসের রোগীদের অবশ্যই ফাইবার বা আঁশজাতীয় খাবার খেতে হবে। ফাইবার মল নরম করতে ও নিয়মিত মলত্যাগে সাহায্য করে।
>> অনেকেই সারাদিনে ৩-৪ লিটার পানি পান করেন না। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই পানি পান করতেই হবে। মনে রাখবেন, শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পারলে অনেক রোগেরই ঝুঁকি কমবে।
>> শরীরচর্চার বিকল্প নেই। রুদ্রজিৎ পাল এ বিষয়ে জানান, সুস্থ থাকতে হলে ব্যায়াম করতেই হবে। ব্যায়াম করলে অন্ত্রের চলন ঠিক থাকে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকতে পারবেন। দিনে অন্ততপক্ষে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন।
>> শিশুকাল থেকেই সবার টয়েলট ট্রেনিং পাওয়া জরুরি। এই চিকিৎসকের মতে, বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যে টয়লেট ট্রেনিং ঠিকমতো না হওয়ার কারণে শিশুরা অনিয়মিত মলত্যাগ করছে। এতে কিন্তু ছোট থেকেই শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে, পরে দেখা যায় এর থেকেই অল্প বয়সেই সে পাইলসের রোগী হয়ে যায়।
এসব নিয়ম মেনেও যদি পাইলসের সমস্যা না কমে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে হবে। এই অবস্থায় ল্যাক্সেটিভসহ বেশ কিছু ওষুধ দারুণ কার্যকরী বলে জানান ডা. রুদ্রজিৎ পাল।
তবে এই রোগ আরও গভীরে চলে গেলে ওষুধেও একসময় কাজ হয় না। তখন করতে হয় সার্জারি। এখন উন্নত প্রযুক্তি দ্বারা এ অপারেশন করা হয়, যা খুবই নিরাপদ। সার্জারির পরে রোগী খুব সহজেই সুস্থ হয়ে যান।
জেএমএস/এসইউ/জেআইএম