বারবার চোখ লাফানো করোনার লক্ষণ নয় তো?
বিশ্বব্যাপী আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনার উপসর্গগুলোর মধ্যে জ্বর-সর্দি-কাশি অন্যতম হলেও এর পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় শরীরে। করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন রূপের মধ্যে উপসর্গগুলোও পরিবর্তিত হয়। আবার এসব উপসর্গের তীব্রতা ও প্রভাব ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়।
সম্প্রতি কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত বেশ কয়েকজন রোগীরা সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি চোখের সমস্যাও রিপোর্ট করেছেন। এক্ষেত্রে চোখের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে আছে কনজেক্টিভাইটিস, পিঙ্ক আই ইনফেকশন ও চোখ লাফানো।
করোনা সংক্রমণের সঙ্গে চোখ লাফানোর সম্পর্ক কী?
এর পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর পেছনে কারণ হতে পারে ক্র্যানিয়াল স্নায়ুর প্রদাহ। এক্ষেত্রে চোখের শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন পেশিগুলোতে ছোট কম্পন সৃষ্টি হয়।
ক্র্যানিয়াল স্নায়ু চোখ, কান, নাকসহ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে বার্তা প্রেরণ করে। এই স্নায়ুগুলোতে প্রদাহ হলে চোখেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ফলে চোখ লাফানোসহ অন্যান্য স্নায়বিক উপসর্গ দেখা দেয়।
করোনায় চোখ কাঁপা বা লাফানোর আরও দুটি কারণ হলো উদ্বেগ ও স্ক্রিন টাইম বেশি হওয়া। এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, কোভিডে আক্রান্ত প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মাথাব্যথা বা চোখ লাফানোর উপসর্গে ভুগেছেন।
চোখের আরও যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে
চোখ কাঁপা ছাড়াও করোনা সংক্রমণের কারণে শুষ্ক চোখ, চুলকানি, লালভাব, কনজেক্টিভাইটিস (গোলাপি চোখ), আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, চোখে ব্যথা কিংবা চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
হঠাৎ করেই যদি এখন আপনার চোখে কনজেক্টিভাইটিস হয়, তাহলে দ্রুত আইসোলেশনে যান। কারণ এটিও হতে পারে করোনার লক্ষণ।
যদি কোনো কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি কনজেক্টিভাইটিসে ভোগেন ও চোখ স্পর্শ করে হাত জীবাণুমুক্ত না করেই কাউকে বা কোনো পৃষ্ঠকে স্পর্শ করেন তাহলে দ্রুত ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস। তাই আপনার মুখ, নাক ও চোখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্য অনুসারে, করোনাঢ আক্রান্তদের মধ্যে ১-৩ শতাংশ মানুষ কনজেক্টিভাইটিসে ভোগেন। ভাইরাসটি যখন কনজাংটিভা নামক একটি টিস্যুকে সংক্রামিত করে তখনই এমনটি ঘটে। এই টিস্যু চোখের পাতার ভেতরের অংশকে ঢেকে রাখে ও চোখে জীবাণুর প্রবেশ রোধ করে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
চোখের পাতা কেঁপে ওঠা বা চোখ লাফানোর সমস্যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে না সারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যদি করোনা সংক্রমণ আপনার দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
চোখ লাফানোর পাশাপাশি অন্যান্য উপসর্গ যেমন মাথা ঘোরা, গুরুতর মাথাব্যথা বা ভারসাম্য হারানোর উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জেআইএম