কসমেটিকস কেনার সময় আসল-নকল যেভাবে চিনবেন
বর্তমানে নারীরা অনলাইন কিংবা বিভিন্ন প্রসাধনীর দোকান থেকে নানা ব্র্র্যান্ডের পণ্য কিনে থাকেন। বেশিরভাগ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস পণ্যের আসল বা নাকল না দেখেন কেনেন অনেকেই।
বর্তমানে আসল কসমেটিকসের মাঝে এখন কপি বা নকল পণ্যে ভরে গেছে বাজার। আপনি হয়তো আসল পণ্যটিই কিনলেন, কিন্তু চিনলেন না পণ্যটি আসল নাকি নকল।
পারফিউম থেকে শুরু করে আইলাইনার, মাশকারা, ফাউন্ডেশন, কনসিলারসহ বিভিন্ন ক্রিম থেকে শুরু করে নানা ধরনের নকল প্রসাধনী এখন প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।
এসব নকল পণ্য ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। না বুঝে অনেকেই এসব প্রসাধনী ব্যবহার করে অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গ্রাহকদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী আসল ব্র্যান্ডের মতোই প্যাকেজিং কিংবা মোড়ক তৈরি করে আসল পণ্যের দামে বিক্রি করেন নকলটি।
এজন্য কসমেটিকস কেনার আগে অবশ্যই সবার সচেতন ও সতর্ক হওয়া উচিত। তাহলে নকলের ভিড়ে আসল পণ্যটি খুঁজে কিনতে পারবেন।
এ বিষয়ে দিল্লি অথেনটিকেশন সলিউশন প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশনের (এএসপিএ) সেক্রেটারি চন্দর এস জিনা নকলের ভিড়ে আসল কসমেটিকস খুঁজে বের করার কয়েকটি পরামর্শ জানিয়েছেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
>> যে কোনো কসমেটিকস পণ্য কেনার জন্য নির্দিষ্ট ওই ব্র্র্যান্ডের আউটলেটে গিয়ে কিনুন। আর তা সম্ভব না হলে এমন বিক্রেতার কাছ থেকে কিনুন যিনি বিশ্বস্ত।
>> একই পণ্য যখন এক দোকানে একটু বেশি দাম আর অন্য দোকানে কম হবে তখন সতর্ক থাকুন। কম দামে হুট করেই ওই প্রসাধনী কিনে ফেলবেন না। হতে পারে আপনি নকল পণ্যটি কিনেছেন।
>> যে কোনো প্রসাধনী কেনার আগে প্যাকেজিংয়ের লেখা পড়ুন। পণ্যটি মেয়াদ আছে কি না কিংবা সেটি কোন কোন উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে, প্যাকেজিং আসল কি না ইত্যাদি বিষয় দেখে কিনুন।
>> এখন ফাউন্ডেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্রিম এমনটি শ্যাম্পু-কন্ডিশনারসহ সব ধরনের প্রসাধনীর মোড়কেই বারকোড থাকে। চাইলে বারকোড স্ক্যান করে পণ্যটি আসল না নকল তা যাচাই করতে পারবেন।
>> যদি কোনো বিক্রেতা জোরপূর্বক কোনো নতুন ব্র্র্যান্ডের পণ্য দেখায় আর বলে ‘এটি খুব ভালো, আর দামেও কম’ তাহলে সাবধান থাকুন।
>> কসমেটিস কেনার আগে অবশ্যই কোন ব্র্যান্ডের পণ্য কিনবেন তার আসল লেবেল সম্পর্কে জানুন। প্রয়োজনে ইন্টারনেটে খুঁজে বের করুন।
নকল ব্র্যান্ডের প্যাকেজিংয়ের সঙ্গে আসলটির ছোটখাট অনেক পার্থক্য থাকে যা আপনি সঠিকভাবে লক্ষ্য করলে টের পাবেন।
>> নকল পণ্যের প্যাকেজিংয়ের রং, আর্টওয়ার্ক, ফন্টের ধরন ইত্যাদি আসলটির মতো হলেও আকার, লোগো ও হলোগ্রামে দৃশ্যমান পার্থক্য থাকে।
এমনটি নামের বানানেও অক্ষর কমবেশি থাকতে পারে। অনেক সময় নকল পণ্যের ব্র্যান্ড বা লোগো থাকে না এমনকি গ্রাফিক্সেও পরিবর্তন থাকতে পারে।
>> কিছু ব্র্যান্ড আপনাকে তাদের ওয়েবসাইট বা অ্যাপে সিরিয়াল নম্বর দেখে বা বারকোড স্ক্যান করে সত্যতা যাচাই করার সুযোগ দেয়। উদাহরণস্বরূপ ল্যাকমি কাজলের সামনের প্যাকেজিংয়ে একটি নিরাপত্তা হলোগ্রাম আছে।
মেবিলাইনের পণ্যের পেছনের প্যাকেজিংয়ে হট-স্ট্যাম্পযুক্ত স্টিকার ব্যবহার করা থাকে। এসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।
>> ম্যাকের কোনো পণ্যের কপি পেলে এ ব্র্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে একটি ‘কাউন্টারফিট এডুকেশন’ বিভাগ আছে ৷ যেখানে ক্রেতারা নকল পণ্য সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে পারেন।
>> আপনি যদি নির্দিষ্ট কোনো প্রসাধনীর নিয়মিত ব্যবহারকারী হন, তাহলে পণ্যটির গঠন ও গন্ধের মধ্যে সামঞ্জস্যতা সন্ধান করুন। একটি নামিদামি ব্র্যান্ড নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার গুণমানকে কখনো বদলাবে না।
যদি আপনার পণ্যটি নকল মনে করেন, তাহলে বৈধ প্রস্তুতকারককে কল করুন কিংবা শিল্প সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করতে পারেন।
>> আপনি যে ব্র্র্যান্ডেরই মেকআপ পণ্য কিনুন না কেন তার আসল বা নকল যাচাই করতে সিরিয়াল নম্বরের মাধ্যমে ডবলচেক করুন।
>> যে কোনো প্রসাধনীই কিনে আনার পর তা ভালো কি না পরীক্ষা করতে প্যাচ টেস্ট করে নিন।
>> আর অবশ্যই কেনাকাটার সময় কি কি পণ্য কোন দোকান থেকে কিনছেন তার রসিদ সঙ্গে রাখবেন। যদি কোনো বিক্রেতা রসিদ না দেয়, তাহলে তার কাছ থেকে চেয়ে নিন।
জেএমএস/এসইউ/জেআইএম