১২৬ বছরেও ফিট তিনি, জানালেন দীর্ঘজীবনের রহস্য
১২৬ বছর বয়স হলেও কোনো রোগ বাসা বাঁধতে পারেনি তার শরীরে। সম্প্রতি এই ব্যক্তি ভারতের পদ্মশ্রী পুরষ্কার লাভ করেছেন তার দীর্ঘ জীবনের জন্য। ২১ মার্চ তিনি এই সম্মাননা গ্রহণ করেন। তাকে সম্মান জানাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও মাথা ঝুকিয়েছিলেন।
বলছি স্বামী শিবানন্দের কথা। তিনি একজন যোগব্যায়ামগুরু। অবিভক্ত ভারতের সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। স্বামী শিবানন্দ মানব সমাজের কল্যাণে তার জীবন উৎসর্গ করেছেন।
স্বামী শিবানন্দের পাসপোর্ট অনুসারে, তিনি ৮ আগস্ট, ১৮৯৬ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে হিসেবে বর্তমানে তার বয়স ১২৬ বছর।
অত্যন্ত দারিদ্রতায় এই যোগগুরুর শৈশবকাল কেটেছে। তার বাবা-মা তাকে শুধু সেদ্ধ ভাত খাওয়াতেন। ৬ বছর বয়সে মা ও বাবাকে হারানোর পর তাকে আত্মীয়রা পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে গুরুজীর আশ্রমে রেখে আসেন।
সেখানকার গুরু ওমকারানন্দ গোস্বামী তার দেখাশোনা করেন। তাকে সব ধরনের ব্যবহারিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদান করেন। তার শিক্ষা পেয়েই সুশৃঙ্খল ও সুনিয়ন্ত্রিত জীবন অতিবাহিত করে আসছেন শিবানন্দ।
যোগব্যায়াম রুটিন ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমেই তিনি দীর্ঘজীবন লাভ করেছেন। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, ১২৬ বছর বয়সেও তিনি সব ধরনের রোগ থেকে মুক্ত। এমনকি আজীবন তিনি যৌনতা থেকেও দূরে রয়েছেন।
স্বামী শিবানন্দ তার দীর্ঘজীবনের রহস্য সম্পর্কে জানান, তিনি খুব সাধারণ খাবার খান। যা তেল ও মসলামুক্ত। তিনি ভাত ও সেদ্ধ ডাল খেতে পছন্দ করেন। দুধ ও ফলমূল একেবারেই খান না তিনি।
২০১৬ সালে এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একটি সরল ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করি। শুধু সেদ্ধ খাবার খাই।’
১২৬ বছর বয়সী এই যোগগুরু এখনো ফিট। তার কোনো চিকিৎসা জটিলতা নেই। তিনি এখনো তার দিন শুরু করেন ভোর ৩টায় জেগে ওঠেন।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণেই তিনি ৩ শতাব্দী ধরে বেঁচে আছেন। এ বয়সেও তিনি কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত যোগব্যায়াম করতে পারেন।
পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এই যোগগুরু মেঝেতে একটি মাদুরে ঘুমান ও বালিশ হিসাবে একটি কাঠের স্ল্যাব ব্যবহার করেন। এমনকি তিনি আধুনিক জীবন উপকরণ থেকেও আলাদা থাকতেই পছন্দ করেন।
তিনি বলেন, ‘আগেকারা মানুষেরা খুব কম জিনিসেই খুশি থাকতেন। আজকাল মানুষ অসুখী, অস্বাস্থ্যকর ও অসৎ হয়ে উঠেছে, যা সত্যিই কষ্টকর। আমি শুধু চাই মানুষ সুখী, সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ হোক।’
সূত্র: এমএসএন নিউজ/টাইমস নাউ নিউজ/ডেইলি মেইল
জেএমএস/জেআইএম