ভিটামিন ডি’র ঘাটতি করোনা সংক্রমণে বিপদ বাড়াচ্ছে
ভিটামিন শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিন শুধু যে হাড়ের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকেও শরীরকে বাঁচায় ভিটামিন ডি। জানেন কি, যে কোনো সংক্রমণ ঠেকাতে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে এর যথেষ্ট ভূমিকা আছে।
এমনকি শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি করোনা সংক্রমণে বিপদ বাড়াচ্ছে- এমনই এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। গবেষণাটি প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বেশিরভাগ মানুষই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে খুব কম সংখ্যক মানুষকে। তবে প্রশ্ন উঠছে, কেন কিছু মানুষ ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে, আর কিছু মানুষ সামান্য উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই সুস্থ হয়ে উঠছেন?
এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক এই গবেষণা জানাচ্ছে, করোনার মৃত্যু ও হাসাপাতালে ভর্তির সঙ্গে ভিটামিন ডি’র সংযোগ আছে। এক্ষেত্রে শরীরে ভিটামিন ডি ২০ মিলি লিটার থাকলে রোগ অনেকটাই সমস্যার দিকে যেতে পারে। অন্যদিকে শরীরে ভিটামিন ৪০ মিলি লিটার থাকলে সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম।
ইজরায়েলের আজরায়েলি ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন অব বার-ইলন ইউনিভার্সিটি ইন সাফেদ ও গেইলি মেডিক্যাল সেন্টার যুগ্মভাবে গবেষণাটি করেছে। শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতির ফলে করোনার তীব্রতা ও এই ভাইরাসের কারণে মৃত্যুর হারের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত গ্যালিলি মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ১৭৬ জন করোনা রোগীর উপরে এই এই গবেষণা পরিচালিত হয়।
গবেষণাটি বিভিন্ন বয়সের, লিঙ্গের, বিভিন্ন রোগাক্রান্ত মানুষের উপর করা হয়। এক্ষেত্রে দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি আছে এমন রোগীর কোভিড সংক্রমণের তীব্রতা অন্যদের চেয়ে ১৪ গুণ বেশি।
এই গবেষণা অনুযায়ী, ভিটামিন ডি’র অভাব নেই এমন রোগীদের মৃত্যুর হার ২.৩ শতাংশ। আর যাদের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি আছে, তাদের মৃত্যুর হার ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
তাই করোনার তীব্র সংক্রমণ এড়াতে গবেষকরা সবাইকে পরামর্শ দিয়েছেন, শরীরে ভিটামিন ডি’র মাত্রা যেন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট সূর্যের আলোয় দাঁড়ান।
এইটুকু সময় সূর্যের আলোয় দাঁড়াতে পারলেই শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হয় ও শরীর থাকে সুস্থ। এক্ষেত্রে নিয়মিত ভিটামিন ডি’র সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
ভিটামিন ডি শুধু হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভালো রাখতেই নয় বরং বিভিন্ন সংক্রমণ ঠেকায় এটি। এ ছাড়াও ফুসফুসের সংক্রমণ, হৃদরোগ, এস্কেমিক হার্ট ডিজিজের ঝুঁকিও কমায় এই ভিটামিন। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি।
সূত্র:সায়েন্স ডেইলি/জার্নাল প্লস
জেএমএস/এমএস