অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলে হতে পারে যে বিপদ
অ্যালার্মের শব্দ না শুনলে ঘুম থেকে ওঠাই যেন কষ্টকর! সবাই এখন অ্যালার্মের অপেক্ষাতেই নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকেন! সময়মতো ঘুম থেকে উঠিয়ে দেওয়ার কাজে অ্যালার্মের অবদান অনেক। কেউ ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখেন, আবার কেউ মোবাইল ফোনে।
তবে প্রতিদিন অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙার কারণে শরীরে এর কোনো প্রভাব পড়ছে না তো? কখনও কি এই বিষয়ে ভেবে দেখেছেন? দৈনিক অ্যালার্মের শব্দ শুনে ঘুম ভাঙলে শরীরে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে বলে জানাচ্ছে এক গবেষণা।
সম্প্রতি সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাপত্রে ঘুম ভাঙার প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
গবেষণাপত্র অনুযায়ী, যারা বছরের পর বছর অ্যালার্মের শব্দ শুনে ঘুম থেকে ওঠেন, তাদের বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দেয়। জেনে নিন সমস্যাগুলো সম্পর্কে-
>> অ্যালার্মের শব্দে যাদের ঘুম ভাঙে তাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ে, তেমনই বলছে সমীক্ষা। শরীরের যতটা প্রয়োজন তার চেয়ে কম ঘুম হলেই এ সমস্যা হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলে ঘুমের ঘাটতি পূরণ হয় না। এ কারণে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়ে।
>> সমীক্ষা আরও বলছে, প্রতিদিন অ্যালার্মের শব্দ শুনে ঘুম ভাঙলে হৃদরোগের আশঙ্কাও অনেকাংশে বেড়ে যায়।
কারণ হঠাৎ করে অ্যলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলে অ্যাড্রিন্যালিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এর ফলে বাড়ে রক্তচাপ। এ কারণে হৃদরোগ হওয়ারও ঝুঁকি বাড়ে।
>> প্রতিদিন অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলে একসময় অভ্যাস হয়ে যায়। যা অবসাদের কারণ হতে পারে।
>> ঘুমের মধ্যে অ্যালার্মের শব্দ কানে এলে আচমকা ঘুম ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন এমন হতে থাকলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যায়।
>> এছাড়াও অ্যালার্মের শব্দে হঠাৎ করে ঘুম ভাঙলে হজমজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বাড়তে পারে অ্যাসিডিটির সমস্যাও।
জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেলথ দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অংশগ্রহণকারীরা হঠাৎ করে ঘুম থেকে জেগে উঠেছেন, তাদের রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
এছাড়াও আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, গভীর ঘুমের সময় মানুষ যখন হঠাৎ জেগে উঠেছিল, তখন তাদের স্মৃতিশক্তি, জ্ঞানীয় ক্ষমতা এমনকি গণনার দক্ষতাও কমে গিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদিও অ্যালার্ম আপনাকে সময়মতো জাগিয়ে দেওয়ার জন্য উপকারী। তবে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। তাই অ্যালার্ম ছাড়াই দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
দৈনিক ঘুমের চাহিদা পূরণ হলে আপনি সময় মতোই জেগে উঠতে পারবেন। এজন্য ঘুমের রুটিন করে নিতে হবে। আর যদি মোবাইল বা অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে অবশ্যই মৃদু শব্দ বা মিউজিক ব্যবহার করবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল
জেএমএস/এমএম