করোনা সতর্কতা : যেসব জায়গা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
ধীরে ধীরে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন। জীবন ও জীবিকার টানে বাইরে বের হতে হচ্ছেই। সবরকম সাবধানতা মেনে চলার পরেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কারণ করোনাভাইরাস এখনও বিদায় নেয়নি। আবিষ্কার হয়নি এর প্রতিষেধকও। মাস্ক ব্যবহার, ঘনঘন হাত ধোয়ার বিষয়টি মেনে চলা সহজ হলেও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা অনেকটাই কষ্টকর, বিশেষ করে এই ঘন বসতির দেশে। তাই বাইরে বের হলে আসলে কেউই নিজেকে নিরাপদ মনে করতে পারছেন না।
করোনাভাইরাস যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে। তবে বাড়ির অভ্যন্তরীণ বা বন্ধ পরিবেশে এটি ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি। যেখানে বায়ু প্রবাহের গুণমান খারাপ এবং একসাথে উপস্থিত লোকের সংখ্যা অনেক বেশি, এমন স্থানে ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যা সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। জেনে নিন সেই জায়গাগুলো সম্পর্কে-
বার ও রেস্টুরেন্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন বার এবং রেস্টুরেন্ট এড়িয়ে চলা উত্তম। ভাইরাল পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলোও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে একটি সাধারণ বুফেতে কীভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে তা পরীক্ষা করে দেখেছিল। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ, কথা বলা (যা করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য উপায়), খাওয়া বা পান করার জন্য মাস্ক সরিয়ে ফেলা দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হতে পারে। এই সময় তাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং এসব জায়গা এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
থিয়েটার এবং কনসার্ট হল
থিয়েটার, বিনোদন কেন্দ্র এবং কনসার্ট হলগুলো এখনও জনসাধারণের জন্য বন্ধ রয়েছে। আপনি যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রোধ করতে চান তবে এগুলো খুলে দেয়ার পরেও এড়িয়ে চলবেন। এসব জায়গায় দূরত্ব বজায় রাখা সত্যিই সম্ভব নয়। সেখানে গেলে ভেতরে মানুষদের সাথে যোগাযোগের সম্ভাবনা বেশি, যা ঝুঁকি বাড়ায়। যদি একান্তই কোথাও যেতে হয় তবে আগে থেকে খোঁজ নিন সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে। কত সংখ্যক লোক সমাগম হবে এবং ভিড় এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে কি না তাও জেনে নিন। খাবারের ব্যাপারেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যক।
সুইমিং পুল
গরমের সময়ে সাঁতার কাটার অভ্যাস থাকে অনেকেরই। শহরে সেজন্য ভরসা করতে হবে সুইমিং পুলের ওপরেই। পাবলিক স্পেসে সাঁতার কাটার সময় অন্যতম মূল প্রয়োজনীয়তা হলো পরিচ্ছন্নতা এবং স্যানিটেশন নিশ্চিত করা। এমনকি সামান্য শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি, ফ্লু বা করোনাভাইরাসের লক্ষণলোতে ভুগছেন তারা ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ করতে পারে।
উপাসনার স্থান
ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা হতে পারে। অন্য যেকোনো অভ্যন্তরীণ জায়গার মতো এসব জায়গায়ও সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেশি থাকে। আপনার যদি যেতেই হয়, কার্যকরভাবে সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সাবধানতা অবলম্বন করে যাওয়া উচিত। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা বাড়িতে থেকে আপাতত প্রার্থনা সারতে পারেন।
গণপরিবহন
চাহিদার তুলনায় গনপরিবহনের সংখ্যা এমনিতেই কম। তাই এই ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা আদৌ সম্ভব কি না সেটি ভেবে দেখার বিষয়। এদিকে করোনাভাইরাস ৯ দিন পর্যন্ত এসব ধাতুর উপর বেঁচে থাকতে পারে। তাই প্রয়োজনে গনপরিবহণে চড়লেও নিজেকে নিরাপদ রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
স্যালন
অনেকদিন বন্ধ থাকার কারণে স্যালনের সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন সবাই। এখন খুলে যাওয়াদে সেখানে ভিড়ও জমছে আগের থেকে বেশি। কিন্তু এই জায়গাটিই হতে পারে সংক্রমণের প্রসুতিঘর। এখানে নানারকম মানুষ প্রতি মুহূর্তেই আসা-যাওয়া করছেন, স্বাস্থ্যবিধিও হয়তো পুরোটা মেনে চলার সম্ভব হচ্ছে না। তাই হেয়ারস্টাইল করতে যাওয়ার আগে জায়গাটি কতটা নিরাপদ সেদিকেও নজর রাখুন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া/এইচএন/পিআর