দুধ পান করলে কি উচ্চতা বাড়ে?
একজন মানুষ লম্বা হবে না কি বেটে, তা অনেকটাই নির্ভর করে জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর। তবে তার জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসের ধরনও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। দুধে থাকা একাধিকপুষ্টি উপাদান উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে আঠার বছর বয়সের পর মানুষের উচ্চতা তেমন বাড়ে না। তাই এই বয়সে পৌঁছানোর আগেই নিয়মিত দুধ পান করতে হবে। দুধ পান করা সব বয়সীদের জন্যই জরুরি। কারণ এটি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
দুধের সঙ্গে লম্বা হওয়ার যে সম্পর্ক রয়েছে নেদারল্যান্ডের নাগকিরদের দেখলেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। কয়েক বছর আগে বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শুধু নেদারল্যান্ড নয়, হল্যান্ডের মানুষরা যে এত লম্বা, তার পিছনেও দুধের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই বিজ্ঞান এবং ইতিহাস দুইই প্রমাণ করে যে লম্বা হতে দুধ পান করা বেশ জরুরি। আফ্রিকার বিখ্যাত শিকারিদের গোষ্ঠী মাসাইদেরও মূল খাবার হল দুধ। তাই তো তাদের উচ্চতাও ডাচেদের মতোই ৬ ফুটের কাছাকাছি।
ইজরাইলের হিবরু ইউনির্ভাসিটির করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, লম্বা হওয়ার সঙ্গে দুধ পানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সেই গবেষণা চলাকালীন একদল শিশুকে প্রতিদিন দুধ খাওয়ানো হয়েছিল, আরেক দলকে দুধের ধারে কাছেও যেতে দেয়া হয়নি।
গবেষণা শেষে দেখা গেছে, যারা দুধ খায়নি, তারা অন্য় দলের শিশুদের তুলনায় প্রায় ১০ সেন্টিমিটার বেটে। দুধে উপস্থিত প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং খনিজ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
দুধ পান এবং উচ্চতার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজতে ৯-১১ বছর বয়সি মেয়েদের উপর একটা গবেষণা চালিয়েছিল একদল মার্কিন বিজ্ঞানী। তারা দেখতে চাইছিলেন দুধের সঙ্গে বাস্তবিকই উচ্চতা বৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা। বহু বছর ধরে চলা এই গবেষণায় দেখা গেছে, যে মেয়েরা বেশি করে দুধ পান করেছেন তাদের উচ্চতা বেশি বৃদ্ধি পয়েছে বাকিদের তুলনায়।
গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দুধ থাকলে শিশু লম্বা হবে। ডেনমার্কের একদল গবেষকের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মায়েরা গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি করে দুধ পান করে থাকেন, তাদের সন্তানের হাড়ের গঠন ভালো হয়।
দুধে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদান নানাভাবে আমাদের শরীরের গঠনে সাহায্য করে। তাই তো শুধুমাত্র দুধ পান করেই অনেকদিন পর্যন্ত সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব। আমাদের শরীরে উপস্থিত ভালো ব্যাকটেরিয়াদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দুধের বিকল্প নেই।
আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পেছনেও দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নানাবিধ হাড়ের রোগকে দূরে রাখতে দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে শরীরচর্চার পর দুধ খাওয়া শুরু করুন।
বোল্ডস্কাই/এইচএন/জেআইএম