একা একা খেলে ওজন কমে, বলছে গবেষণা
বন্ধু ছাড়া আপনি চলতেই পারেন না? এমনকী এককাপ কফি খেতেও সঙ্গীর প্রয়োজন পড়ে? হৈ-হুল্লোর আর জমজমাট আড্ডায় সমানে চলে মুখরোচক সব খাবার? এদিকে আপনার ওজনের কাটা দিনদিন উর্ধ্বমুখী!
এইযে সবার সঙ্গে খাওয়ার অভ্যাস, ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে কি? আমেরিকার গবেষকরা কিন্তু এমনটাই জানাচ্ছেন। সম্প্রতি ‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রেশন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষকরা ওজন বাড়ার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হিসেবে দলবেঁধে খাওয়াদাওয়া করাকেই দাবি করছেন।
বিভিন্ন সময়ে একাধিক দলের উপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকদের দাবি, অনেকের সঙ্গে বা চেনা মানুষজনের সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে বসলে প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই ‘ডায়েট ল্যাপস’ বা ডায়েট ছাপিয়ে খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কোনো পার্টি বা দাওয়াতে একা খেলে যেটুকু অনিয়ম হয়, অনেকের সঙ্গে মজা করে খেতে বসলে সেই অনিয়ম বেড়ে যায় অনেকটা!
আমেরিকান ফিজিওলজিস্ট জন দে কাস্ত্রোর মতে, একা খেলে ক্যালোরি গ্রহণের মাত্রা অনেকটা কমে। ডায়েট চার্টকে মাথায় রেখে খাওয়াও যায়। কী রকম সেটা? কাস্ত্রোর ব্যাখ্যা: ধরা যাক, রেস্তরাঁয় একসঙ্গে খেতে গিয়েছেন। পেট ভরে গিয়েছে আপনার। তবু দলের চাপে আর শুধুই ‘চোখের ক্ষুধা’-র বশবর্তী হয়ে শেষ পাতে আর একটু ডেজার্ট চেখে ফেললেন। যে খাবার কখনো খাননি তাও খেয়ে ফেললেন। এছাড়া অনেকেই ভেবে থাকেন, একসঙ্গে খেলে খাবারের পরিমাণ ভাগ হয়ে যাওয়ায় ভাগে কম খাবারই জোটে। আসলে উল্টোটা ঘটে। অনেকে মিলে খেলে সবার খাবার একসঙ্গে ভাগ করে খাওয়ার সময় পরিমাণ অত হিসেব করা যায় না। আর তাতেই বাড়তে থাকে ওজন।
এই ব্যাখ্যায় সহমত প্রকাশ করেছে ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত আর এক গবেষণাপত্রও। সেখানে ইংরেজ গবেষকরা দাবি করেছেন, সঙ্গী কোনোভাবে মোটা হয়ে গেলে ও বেশি খাওয়ার অভ্যাস আয়ত্তে আনলে, তার সঙ্গে খেতে বসলে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা বেড়ে যায় প্রায় ১৭১ শতাংশ।
একসঙ্গে খেলে যে যে কারণগুলোয় বেশি খাওয়া হয়ে যায়, তার মধ্যে অন্যতম নানা রকম খাবারের স্বাদ নেয়া, অনেকটা খাবার অর্ডার করে ফেলা বা নষ্ট হওয়ার ভয়ে খেয়ে ফেলা। ফলে একা খেলে যে খাবারের মাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে তা অবশ্যই ঠিক। তাই ওজন কমাতে চাইলে একা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
এইচএন/জেআইএম