শিশুকে ভালো স্পর্শ ও খারাপ স্পর্শ শেখাবেন যেভাবে
যৌন নির্যাতনের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত নয় শিশুও! পত্রিকা-টেলিভিশন খুললেই শিশুর যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার খবর দেখতে পাওয়া যায়। শুধু কন্যাশিশু নয়, যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে পুত্রসন্তানও। সামাজিক নানা অসঙ্গতির কারণে সবক্ষেত্রে মেলে না সঠিক বিচার। ফলে অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে দিনদিন। এক্ষেত্রে মানসিকতায় পরিবর্তন আনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করতে হবে।
যৌন নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে শিশুকেও প্রথম থেকেই শিক্ষিত করে তোলা প্রয়োজন। ছোট থেকেই ভালো স্পর্শ- খারাপ স্পর্শের পার্থক্য শিশুকে বুঝিয়ে দিন। শিক্ষাটা শুরু হোক বাড়ি থেকেই। জেনে নিন কীভাবে কঠিন এই বিষয়টি সহজ করে বোঝাতে পারবেন-
খেলায় খেলায় বোঝান: শিশুকে এই বিষয়টি বোঝানো মোটেই সহজ কাজ নয়। তাই যে কাজ করতে শিশুর ভালোলাগে, তার মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করলে কাজটি সহজ হতে পারে। লুকোচুরি খেলতে গিয়ে তাকে খুঁজে পেলে জড়িয়ে ধরুন এবং জিজ্ঞেস করুন, কেমন লাগছে? মা-বাবার জড়িয়ে ধরা নিশ্চয়ই শিশুর ভালোলাগবে। তখন তাকে বোঝাতে হবে যে এটি হলো ভালো স্পর্শ এবং অন্য কেউ যদি জড়িয়ে ধরে তবে তা খারাপ স্পর্শ।
সচেতন করান প্রাইভেট পার্ট সম্পর্কে: শিশুর বয়স পাঁচ হওয়ার আগেই তার প্রাইভেট পার্ট সম্পর্কে বুঝতে শেখান। ওইসব অঙ্গতে হাত দিয়ে কখনো আদর করবেন না। এমনকী, কেউ যে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে প্রাইভেট পার্টে হাত দিতে পারে না, সেটা শিশুকে দুই-পাঁচ বছর বয়স হলেই বোঝাতে থাকুন।
অনুমতি নিন: গোসল করিয়ে দেয়া বা জামা পাল্টে দেয়ার সময় আপনি যখন শিশুর প্রাইভেট পার্টে হাত দেবেন, তখন ওর অনুমতি নিন। এতে শিশু শিখবে, অনুমতি ছাড়া কেউ, এমনকী, মা-বাবাও তার প্রাইভেট পার্টে হাত দিতে পারে না। তাতে করে সে সতর্ক হতে শিখবে।
কথা বলুন সহজ ভাবে: ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ শেখানোর সময় শিশুর সঙ্গে বড়দের ভাষায় গুরু গম্ভীর আলোচনা করবেন না যেন! তাতে বিষয়টি তাদের কাছে আরও ভীতকর ঠেকবে। এমনকী এই বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে আলোচনা করতে যাবেন না। বরং দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের ভেতরে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন।
চিৎকার করতে শেখান: শিশুকে বোঝান, যখনই কারও স্পর্শ তার ভালোলাগবে না, সে যেন চিৎকার করে। হতে পারে তা পরিবারের অন্য কোনো সদস্য, আত্মীয়, পরিচিতজন বা একেবারেই অচেনা কেউ। যেকোনো পরিস্থিতিতে স্পর্শ পছন্দ না হলে যেন চিৎকার করে প্রতিবাদ করে।
শিশুর ভরসা হয়ে উঠুন: শিশু যেন আপনার প্রতি আস্থা রাখতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ আপনি সব সময় তার প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করুন যেন সে নির্ভয়ে সবকিছু আপনাকে বলতে পারে। শিশুকে বোঝানোর চেষ্টা করুন আপনিই তার ভরসা এবং বিশ্বাসের জায়গা। তার মন খারাপ হলে, কোনোকিছু ভালোলাগলে বা না লাগলে সে যেন নির্দ্বিধায় আপনাকে সবটা বলে। বিদ্যালয়ে এমন কিছুর শিকার হলে শিক্ষককে যেন জানিয়ে দেয়, সেটিও বলে রাখুন। শিশু যখনই কারও বিষয়ে অভিযোগ করবে, তার কথা বিশ্বাস করুন। কারণ শিশু এবিষয়ে সচারচর বানিয়ে বলে না।
এইচএন/পিআর