অন্যদের থেকে শীত বেশি লাগে? জেনে নিন কারণ
শীত বেশ জেঁকে বসেছে এ বছর। তাপমাত্রার নিম্নমুখিতায় এমনিতেই সবার ঠান্ডা বেশি লাগছে অন্যান্য বছরের তুলনায়। যাদের ঠান্ডার অনুভূতিটা অন্যদের থেকে তুলনামূলক বেশি, তাদের আরও কিছুদিন একটু সামলে চলতে হবে। এখন কথা হলো, একই তাপমাত্রায় সবার সমান ঠান্ডা লাগে না কেন? কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় অন্যদের থেকে বেশি ঠান্ডা লাগছে। মূলত অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার পিছনে কিছু শারীরিক সমস্যা দায়ী। জেনে নিন-
লোহিত রক্ত কণিকার অভাব হলে: লোহিত রক্ত কণিকা আমাদের শরীরে প্রতিটি কোণে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়ার কাজ করে। এই কাজটি ঠিকমতো হলেই কেবল শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে। এর ব্যতিক্রম হলে ঠান্ডা লাগতে শুরু করে। কোনো কারণে লোহিত রক্তকণিকার ঘাটতি দেখা দিলে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে। শীতে তাপমাত্রা কম হওয়ার কারণে এমনিতেই শীত বেশি অনুভব হয়, তার উপর যদি রক্তকণিকার ঘাটতি থাকে, তবে সমস্যা আরও জটিল হয়। এক্ষেত্রে যেসব খাবারে আয়রন বেশি, সেগুলো খেতে হবে। কারণ আয়রনের মাত্রা বাড়লে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়ে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
থাইরয়েড বেশি হলে: হাইপোথাইরয়েডিজম রোগে আক্রান্ত হলে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ নিয়ম মেনে হয় না, আর তাই হজম ঠিকমতো হওয়ার সুযোগ পায় না এবং শরীরের তাপমাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে একটু বেশিই ঠান্ডা লাগে। তবে থাইরয়েড রোগে হলে ঠান্ডা লাগার পাশাপাশি অল্পতেই ক্লান্ত লাগা, ওজন বৃদ্ধি, মানসিক অবসাদ, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া এবং কথায়-কথায় ভুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। এমনটা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ঘুম না হলে: অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে অনেক রকম অসুখ হতে পারে। তাই বলে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শীত বেশি অনুভূত হয়? আসলে ঠিকমতো ঘুম না হলে দেহের সারকাডিয়ান রিদম এলোমেলো হয়ে যায়, যে কারণে একটু বেশিই ঠান্ডা লাগে। তাই হাড়ে-হাড়ে কাঁপুনি একটু বেশি হলে খেয়াল করবেন ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে কিনা। যদি দিনে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমানোর পরেও সমস্যা থেকেই যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ওজন কমলে: ওজন কমানোর প্রচেষ্টা এখন প্রায় সবারই। কিন্তু ওজন কমার সঙ্গেও ঠান্ডা অনুভূত হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে সেকথা কি জানতেন? একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন, যারা স্বাস্থ্যবান, তাদের ঠান্ডার অনুভূতি তুলনামূলক কম। ওজন কমতে শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই চর্বি ঝরতে শুরু করে। সেকারণে একটু বেশিই ঠান্ডা লাগে। তা ছাড়া ওজন কমাতে বেশিরভাগই শরীরচর্চার পাশাপাশি ডায়েটিং করেন। ফলে ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া অনেকটা কমে যায়, যে কারণে মেটাবলিজম রেটও কমতে থাকে। আর একারণে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রাও কমে যায়। তাই একটু বেশিই ঠান্ডা লাগে।
এইচএন/পিআর