শীত এলেই অসুখের ভয়? দূর করুন এভাবে
শীতে লোভনীয় সব পিঠাপুলি আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি রয়েছে কিছু অসুখের ভয়। হঠাৎ ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি-জ্বর, কখনো প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, আজমা বা হাঁপানির সমস্যা আর সেইসঙ্গে রয়েছে অতি পরিচিত ত্বকের সমস্যা। শীতের আগমনকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি তাই এইসব অসুখকে দূরে রাখার প্রস্তুতিও নিতে হবে। চলুন জেনে নেই-
সর্দি-কাশি-জ্বর প্রতিরোধে করণীয়:
সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হলে অন্যদের সঙ্গে, বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সতর্কতা অবলম্বন করুন। হাঁচি দেয়ার সময় বা নাকের পানি মুছতে রুমাল বা টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন। রোগীর ব্যবহৃত রুমাল বা গামছা অন্যদের ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখুন। যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লেষ্মা ফেলা যাবে না।
স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করতে হবে। প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরুন, বিশেষ করে তীব্র শীতের সময় কান ঢাকা টুপি এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করুন।
তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যা দেহকে সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। মাঝেমধ্যে হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করুন বা হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।
অ্যাজমা প্রতিরোধে করণীয়:
অ্যাজমার রোগীরা শীতে পর্যাপ্ত গরম জামা-কাপড়ের বন্দোবস্ত করুন। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করুন। বিশেষ করে শোবারঘরটি উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন।
অ্যাজমার ট্রিগারগুলো জেনে সতর্কভাবে চলুন। শীতের আগেই চিকিৎসককে দেখিয়ে ইনহেলার বা অন্যান্য ওষুধের ডোজ সমন্বয় করে নিন।
ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়:
অলিভ অয়েল ত্বকে আলাদা আস্তর তৈরি করে বলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শীতের সময় তাই অলিভ অয়েল বা লুব্রিকেন্টজাতীয় কিছু ব্যবহার করুন। খুশকি দূর করতে অন্য সময়ের চেয়ে শীতে বেশি করে চুল শ্যাম্পু করুন।
হাত ও পায়ের তালু এবং ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে দিন। ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার যেমন ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ব্যবহার করুন। বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না বা কড়া আগুনে তাপ পোহাবেন না। এতে চামড়ায় সমস্যা তৈরি হতে পারে।
গোসলে যথাসম্ভব সাবান কম ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া বিভিন্ন ময়েশ্চারাইজার ক্রিম, তেল, লোশন ব্যবহার করলে ত্বকের পানি বাতাসে চলে যেতে পারে না। তাই ত্বক ভালো থাকে। পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া উচিত।
ভিটামিন ‘এ’ বা বিটা ক্যারোটিন ত্বকের সুস্থতার জন্য জরুরি। নিয়মিত সবুজ শাকসবজি, গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, মাছ খেলে ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি পূরণ হয়। এছাড়া ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এসব পাওয়া যায় ডিমের সাদা অংশ, ঢেঁকিছাঁটা চাল, কলিজা, দুধ, গাজর, টমেটো ইত্যাদিতে।
ত্বক ফেটে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে ভিটামিন ‘সি’ ও ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ভিটামিন ‘ই’ সেবন করা উচিত। এছাড়া ত্বক ভালো রাখতে সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, প্রচুর পানি পান করা, হালকা ব্যায়াম করা উচিত।
এইচএন/পিআর