জেনে নিন ভাত খাওয়া কতটা উপকারী
একটু স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ মাত্রই ভাতের নাম শুনলে আঁতকে ওঠেন! তারা মনে করে থাকেন, ভাত খেলেই বুঝি ওজন হু হু করে বাড়তে থাকবে। আর নানারকম অসুখ হলে তো কথাই নেই, সোজা দোষ চাপানো হয় ভাতের ঘাড়ে! তাই খাবারতালিকা থেকে ছেঁটে ফেলেন ভাতের নাম। কালেভাদ্রে ভাত খেলেও আফসোসের সীমা থাকে না যেন!
ভাত খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী তা অনেকেই জানেন না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ভাতকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপকারী হিসেবে দেখানো হচ্ছে! একথা ঠিক যে এশিয়া মহাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এক্ষেত্রে ভাত খাওয়ার অভ্যাসকে দোষ দেয়া হয়, এর পাশাপাশি আবার স্থুলতার সঙ্গেও ভাতের সরাসরি যোগ আছে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু এসব কতটুকু সত্যি?
সাদা চালের ঝরঝরে যে ভাত খেয়ে আমরা অভ্যস্ত, তা মেশিনে কেটেছেঁটে অনেকটা বাদ দেয়ার ফলে নিশ্চিতভাবেই পুষ্টিগুণ হারায় বেশ খানিকটা। কিন্তু আবার বাইরের আস্তরণ বাদ দেওয়ার ফলেই তা হজম করা সহজ হয়ে যায়। যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সেদ্ধ চাল। মাড় বাদ দিয়ে ভাত খাবেন। ভাতের ফাইবার পেট ভরিয়ে রাখবে, কোষ্ঠকাঠিন্যও সেরে যেতে পারে।
ভাতের কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে অনেক বেশি সময় লাগে আপনার শরীরের, তাই যারা ওজন বাড়ার ভয়ে ভাত থেকে দূরে থাকছেন, তাদের দুশ্চিন্তা নেহাতই অমূলক। বরং ভাতে যে বাড়তি পানি থাকে, তা আমাদের আর্দ্র আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।
একথা ঠিক যে ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স একটু বেশি, আর ঠিক এ কারণেই বাঙালিরা সনাতন কাল থেকেই ভাতের সঙ্গে নানা ধরনের শাক-সবজি, ডাল, মাছ ইত্যাদি খেতে অভ্যস্ত। লাল চালের ভাতে অবশ্য ভিটামিন ও মিনারেলের পরিমাণ বেশি। তবে লাল বা কালো চাল হজমের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হতে পারে, সেটিও মাথায় রাখবেন।
সুস্থ থাকতে চাইলে সুষম, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকবে নিশ্চয়ই, কিন্তু সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত ডাল-মাছ, শাক-সবজিও খেতে হবে। ভাতের মধ্যে নানা সবজি মিশিয়েও খেতে পারেন। পেট পুরে শুধু ভাতই খাবেন না, বরং ডাল, তরকারি, সালাদ, মাছ, মাংস সবকিছুই পাতে রাখুন।
এইচএন/জেআইএম