দই খেলে কী হয়?
শেষপাতে একটুখানি দই না হলে খাবার সম্পূর্ণ হয় না অনেকের। ভোজনরসিক বাঙালির খাবারের তালিকায় দই থাকবেই। দুধের ব্যাকটেরিয়া গাঁজন থেকে দই তৈরি হয়। ল্যাকটিক অ্যাসিড দুধের প্রোটিনকে দইয়ে পরিবর্তিত করে। এই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার খেলে আমাদের শরীর নানাভাবে উপকৃত হয়। গরমের সময়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে মূখ্য ভূমিকা রাখে টক দই।
দইয়ে সাধারণত প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন বি১২ থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে শক্তি থাকে ২৫৭ ক্যালরি, শর্করা ৪.৭, চিনি ৪.৭, স্নেহ পদার্থ ৩.৩ গ্রাম, সুসিক্ত স্নেহ পদার্থ ২.১ গ্রাম, প্রোটিন ৩.৫ গ্রাম, ভিটামিনসমূহ ০.১৪ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১২১ মিলিগ্রাম।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অনটারিও-এর মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও লৌসন হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর হিউম্যান মাইক্রোবায়োলজি এন্ড প্রোবায়োটিকসের সভাপতি হলেন গ্রেগর রেইড। তিনি দাবী করেছেন গাঁজন প্রক্রিয়ায় তৈরি দই খেলে মানবদেহে পাকস্থলীর উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বা প্রোবায়োটিক্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে।
দইয়ের উপকারিতা:
দই নিয়মিত খেলে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমে যায়। দই খেলে খাবার খুব সহজে হজম হয়ে যায়। শরীরে খাবার পরিপাক হতে সমস্যা হয় না। পাচনক্রিয়া ঠিকভাবে হয়। হজম শক্তি বাড়ে। শরীরে ফ্যাট জমতে পারে না। ফলে মোটা হওয়ার ভয় থাকে না। শরীর সুস্থ থাকে। গরমকালে দই খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। পেট ঠান্ডা রাখতে গরমকালে অবশ্যই দই খাওয়া ভালো।
মাথাধরা বা মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে সেটা দই দূর করতে পারে। রোজ সকালে একবাটি টক দই চিনি মিশিয়ে খেলে মাথাধরা বা মাইগ্রেনের ব্যথা হবে না। কাজ করার উৎসাহ বাড়বে।
দই হার্টের সমস্যা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে। যদি কারও হার্টের সমস্যা থাকে বা হাইপার টেনশন থাকে তাহলে তা দই খেলে স্বাভাবিক রাখা যায়। রোজ দুপুরে খাবার পর একবাটি দই খেলে হার্ট ভালো থাকে। শরীরে কোলেস্টরল কমিয়ে দেয় দই।
চুলের যত্নে দই:
চুলের জেল্লা ফেরাতে দইয়ের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ভালো। চুল খুব শুষ্ক হলে সপ্তাহে ২ দিন করে চুলে টক দই লাগালে চুল মসৃণ হয়। শুষ্কতা কমে যায়। চুলে উজ্জ্বলতার জন্য মাসে ২ বার করে টক দই লাগানো যেতে পারে। চুলের পরিমাণ অনুযায়ী দই নিয়ে মাথায় লাগিয়ে রাখতে হবে। চুল শুকিয়ে গেলে ভালো করে ঠান্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দইয়ের সাথে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পরা কমে যায়।
ত্বকের যত্নে দই:
ত্বকের সমস্যায় দইয়ের ব্যবহার করা যায়। গরমকালে ত্বক ঘামে তেলতেলে হয়ে যায়। অনেকের ত্বক তৈলাক্ত হয়। এই তেলতেলে ভাব দূর করতে দই মুখে লাগানো কার্যকরী। দই আর বেসন মিশিয়ে মুখে লাগালে মুখের তৈলাক্ততা দূর হয়ে যায়। ত্বক পরিষ্কার ও মসৃণ থাকে। যাদের ব্রণ হয় খুব তারা নিয়মিত দই মাখলে ব্রণও হবার থেকে মুক্তি পাবে।
এইচএন/এমকেএইচ