জেনে নিন হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও প্রতিকার
হেপাটাইটিস বি এমনই এক রোগ যার উপসর্গ সহজে প্রকাশ পায় না। আবার যখন প্রকাশ পায়, ততক্ষণে তা সংক্রমিত হয়ে পড়ে। হেপাটাইটিস বি একটি সংক্রামক রোগ। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি দেখা দেয় যা যকৃতে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায়। রক্ত, বীর্য অথবা শরীরের অন্যান্য তরল পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। বড়দের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ ভালো হয়ে গেলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বর্তমানে আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক ভাইরাস "হেপাটাইটিস"এর যত দ্রুত সংক্রমণ ঘটছে তার ভয়াবহতা এইডসের চেয়েও ভয়ঙ্কর দুঃসংবাদ নিয়ে গোটা মানবজাতির জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হেপাটাইটিস বা লিভারের একিউট এবং ক্রনিক সংক্রমণের জন্য দায়ী লিভার ভাইরাসগুলো হচ্ছে হেপাটাইটিস-এ, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, হেপাটাইটিস-ডি এবং হেপাটাইটিস-ই।
হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের কারণে লিভারে প্রদাহের সৃষ্টি হয়ে থাকে। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে এই রোগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাইরাস তাদের নবজাতকের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস, এইডস রোগের চেয়ে ১০০ ভাগ বেশী সংক্রামক। দিনকে দিন হেপাটাইটিস-বি আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপসর্গ
আক্রান্ত রোগীর কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। এই রোগের সুপ্তবস্থা (ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রোগের লক্ষণ পর্যন্ত) প্রায় ৪ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। এক্ষেত্রে ফ্লু-এর মতো জ্বর, ক্লান্তিবোধ, শরীর টনটন করা, ব্যথা, বমিভাব এবং ক্ষুধামন্দা-এই রোগের লক্ষণ।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
১. রোগাক্রান্ত মায়ের নবজাতকেরা।
২. ইনজেকশন দিয়ে যারা নেশা গ্রহণ করেন।
৩. আক্রান্তের পরিবারের ঘনিষ্ঠ জনেরা এবং তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী।
৪. স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা যারা রক্তের সংস্পর্শে প্রায়শই আসেন, যেমন- শল্য চিকিৎসক, ডায়ালিসিস ইউনিট ও প্যাথলজি বিভাগের কর্মীরা, দাঁতের ডাক্তার, নার্স।
রোগের প্রতিরোধে করণীয়
১. যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করুন।
২. সালাদ, ফলমূল বেশি খাবেন। তেল-চর্বি যুক্ত খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৩. মাটন খাবেন না। লবণ খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখুন।
৪. প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটবেন।
৫. ব্যায়ামের অভ্যাস করবেন।
৬. দিনে একবেলার বেশি ভাত খাবেন না, দুই বেলা রুটি খাবেন। ধূমপান, মদ্যপান নিষিদ্ধ।
৭. HBsAG পরীক্ষা করুন এবং যথাসম্ভব দ্রুত হেপাটাইটিস-বি এর প্রতিষেধক নিন। এতে অনেক দ্রুত রোগটিকে আটকানো যায়।
ফেমিনা/এইচএন/এমএস