যে কারণে প্রতিদিন মাছ খাবেন
বলা হয়ে থাকে, মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালির খাবার পাতে ধোঁয়াওঠা গরম ভাতের সঙ্গে মাছের কোনো পদ না থাকলে খাবার জমে না যেন। তবে কেউ কেউ আবার মাছ খেতে খুব বেশি পছন্দ করেন না। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে মাছ খেতে পছন্দ করার প্রবণতা কম। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত এক পদের মাছ রাখতে হবে। মাছ ডুবো তেলে ভেজে না খেয়ে বরং সেদ্ধ, বেকড, ঝলসিয়ে কিংবা অল্প তেলে ভেজে খেলে বেশি উপকার মিলবে।
আরও পড়ুন: যে কারণে প্রতিদিন চিনা বাদাম খাবেন
মাছের তেলে আছে পলি আনস্যাচুরেটেড এসেনশিয়াল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রচলিত কথায় ওমেগা থ্রি’জ৷ তিন ধরনের ওমেগা থ্রি হয়, এএলএ (আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড), ডিএইচএ (ডোকোসাহেক্সেনোয়িক অ্যাসিড) ও ইপিএ (ইকোস্যাপেনটেনিনোইক অ্যাসিড)। সামুদ্রিক মাছে, পুকুর ও নদীর কিছু তৈলাক্ত মাছে ডিএইচএ এবং ইপিএ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। ফলে নিয়মিত খেলে হার্টও ভালো থাকে।
মাছে ভালো জাতের প্রোটিন প্রচুর থাকে বলে খেলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে। এটি রক্তে চর্বির মাত্রা কমিয়ে ইসকিমিক হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতেও সে সিদ্ধহস্ত।
ওমেগা থ্রি-র প্রভাবে মন ভালো থাকে। মানসিক চাপ-উদ্বেগ কম হয়। এমনকি, ডিপ্রেশনের রোগী যদি ওষুধের সঙ্গে পর্যাপ্ত মাছ খান, রোগ সারে দ্রুত। আর স্ট্রেস-টেনশন-ডিপ্রেসন কম থাকলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
তৈলাক্ত মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছকে বলে ব্রেন ফুড। সপ্তাহে মাত্র এক দিন খেলেই স্মৃতিশক্তি, নতুন কিছু শেখা ও চিন্তা-ভাবনার দক্ষতা বাড়ে। বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গিয়েছে, যারা নিয়মিত বেকড বা ব্রয়েল্ড মাছ খান, তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে, ফলে বয়সের সঙ্গে অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
ছোট থেকে তৈলাক্ত মাছ খেলে মস্তিষ্ক উন্নত মানের হয়। তবে শিশুদের সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানোর আগে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সবচেয়ে ভালো হয়, নিয়মিত পুকুর বা নদীর মাছ খাওয়ানোর পাশাপাশি সপ্তাহে এক-আধ দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ালে।
ত্বক-চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ওমেগা থ্রি-র ভূমিকা আছে। সোরিয়াসিস নামে ত্বকের অসুখের প্রকোপ কমাতে ওষুধপত্রের সঙ্গে অনেক সময় তৈলাক্ত মাছ খেতে বলা হয়।
৩ আউন্সের এক পিস স্যামন খেলেই ভিটামিন ডি-এর যা চাহিদা, তার ৭৫ শতাংশ পূরণ হয়ে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। হাড় সুস্থ থাকে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন কখন ফল খাওয়া ক্ষতিকর
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত দুবার তৈলাক্ত মাছ খেলে শুক্রাণুর মান ভালো হয়।
এইচএন/পিআর