নির্বিঘ্নে ঘুমাবেন যেভাবে
সারাদিন চনমনে থাকতে প্রয়োজন রাতের বেলা পর্যাপ্ত ঘুম। নিয়মমাফিক ঘুমই পারে আপনাকে পরের দিনটির জন্য তৈরি করতে। ঘুমে সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। যে কারণে দিনের বেলা কাজ করতে অসুবিধা হয়। আর দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমে অনিয়ম হলে তার প্রভাব হতে পারে আরো বেশি ক্ষতিকর। তাই প্রতি রাতে নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করুন।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক ঝলক দেখে নিন যে, আপনার শোয়ার ঘরটি কোন অবস্থায় আছে। অগোছালো ঘর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ২০১৫ সালে নিউ ইয়র্কের একটি গবেষণায় দেখা গেছে অগোছালো ঘর আপনার মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যা সমানভাবে আপনার ঘুমকেও বিঘ্নিত করতে পারে। তাই ঘুমের আগে ঘরটি গুছিয়ে নিন।
ট্যাব ও ল্যাপটপের মতোই ক্ষতিকর হলো, মোবাইল ফোন। শতকরা ৬০% ভাগ মানুষ বিছানায় যাওয়ার পরও বারবার তাদের ফোন চেক করে থাকেন। এতে ঘুমের খুবই ক্ষতি হয়। ফোনের স্ক্রিনের আলো আপনার ঘুম নষ্ট করে দিতে পারে। চেষ্টা করুন অন্তত ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন না ব্যবহার করতে।
ফোন বিছানা থেকে দুরে রাখুন। দরকার হলে অন্য রুমেও রেখে আসতে পারেন। ফোন ফ্লাইট মোডে রেখে দিন বা অফ করেও রাখতে পারেন।
ডি- হাইড্রেটেশন বা পানি স্বল্পতা ঘুম না আসার অন্যতম কারণ। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অগে এক গ্লাস পানি পান করতে পারেন। সারাদিন যে পানিগুলো শরীর থেকে বের হয়ে যায়, এর অভাব পূরণ করতে ঘুমাতে যাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে দু গ্লাসের মতো পানি করুন। পানি আপনার শরীরে মিনারেলস, ও ভিটামিনের ভারসাম্য রক্ষা করে।
রাতে ঘুম না আসার আরেকটি প্রধান কারণ হলো মাত্রাতিরক্ত গরম। তাই ঘুমাতে যাওয়ার সময় নরম সুঁতি কাপড়কে প্রাধান্য দিন। খুব গরমে ঘরের লাইটগুলো সবসময় অফ করেই রাখবেন। এতে ঘর তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে।
কখনোই ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যাবেন না। যখন আপনি ক্ষুধা অনুভব করবেন তখন আপনার মস্তিষ্ক সচেতন হয়ে যাবে। যা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। এরপর ক্ষুধা লাগলে হালকা যেকোনো কিছু খেয়ে নিন। এক্ষেত্রে জলপাই বা ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত অন্য যেকোনো ফল সহায়তা করবে। কারণ ম্যাগনেসিয়াম তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে সহায়তা করে।
রাতে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় মানে, চা বা কফি পান করবেন না। কেননা এগুলোর প্রভাব দীর্ঘ চার -পাঁচ ঘন্টা থাকে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা বা কফি পান বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
বিছানায় যাওয়ার পর অতিরিক্ত কিছু চিন্তা করবেন না। যতটা সম্ভব কম চিন্তা করার চেষ্টা করুন। রিল্যাক্সড থাকার জন্য যেকোনো ধরনের ইয়োগা বা ধর্মীয় যেকোনো কাজ করতে পারেন। অথবা পড়তে পারেন প্রিয় কোনো গল্পের বই বা কবিতা।
অনেকেই শখ করে নিজের পোষা প্রাণী নিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করে থাকেন। রাতের এই অভ্যাসটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর। পোষা প্রাণী ও আপনার নিদ্রায় ছন্দ পতন ঘটাতে পারে। তাই বলি, এ অভ্যাস বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। এসব প্রাণীর লোম মুখে বা নাকে প্রবেশ করলে আপনি ভাইরাল জনিত রোগে ভোগতে পারেন।
আরও পড়ুন : বিনা পরিশ্রমেই ঘেমে যাচ্ছেন?
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খুব বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। এসব খাবার খেলে ঘুম দেরিতে আসা স্বাভাবিক।
শারীরিক ব্যায়াম না করা অনিদ্রা রোগের প্রধান কারণ। তাই যতটা সম্ভব পরিশ্রম করুন। এতে রাতে ভালো ঘুম আসবে।
এইচএন/জেআইএম