কিডনির সমস্যা নিয়েই কি রোজা রাখছেন

রোজার শেষ প্রান্তে এসে কি দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথাব্যথার মতো সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে দ্রুত পানিশূন্যতা কাটানোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আর আপনি যদি কিডনিজনিত অসুখে ভুগে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন যে আপনার শরীর রোজার ধকল সামলাতে পারছে কি না?
সারাজীবন নিয়ম করে রোজা রেখে এসেছেন, তাদের অনেকে বয়স বাড়ার পর শারীরিকভাবে ফিট না হলেও রোজা বাদ দিতে চান না। কিছু কিছু অসুস্থতায় রোজা রাখলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে কিডনি রোগের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু আলাদা। কারণ আমাদের শরীরে উপস্থিত পানি ও পানির অভাব, দুটোই কিডনির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। কিডনির অল্প সমস্যা থাকলে অনেক সময় রোজা রাখা যায়। তবে কোন পরিস্থিতিতে আপনার শরীর আর রোজার ধকল নিতে পারবে না, সেটা জানা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, ডা. শেখ মইনুল খোকন বলেন, ‘যাদের আগে থেকেই কিডনির সমস্যা আছে, বিশেষ করে যারা স্টেজ থ্রিতে আছেন, তাদের জন্য রোজা রাখার কিছু নিয়ম আছে। শুরুতে দেখতে হবে রোজা শুরুর আগে আপনার কিডনি কী পরিস্থিতিতে ছিল। সাত দিন রোজা রেখে আবার রক্ত পরীক্ষা করে রোজার প্রভাব দেখতে হবে।’
ডা. খোকন জানিয়েছেন, রোজা রাখার সাত দিন পর যদি ক্রিয়েটিনিন ২৫ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হয়ে যায়, এর অর্থ আপনার কিডনি রোজা রাখার মতো পরিস্থিতিতে নেই। অর্থাৎ রোজা শুরু করার আগের দিন যদি আপনার ক্রিয়েটিনিন ১ থাকে, আর সাত দিন পর যদি এটা ১ দশমিক ২৫ বা তার বেশি হয়, তাহলে আপনি রোজা রাখতে পারবেন না। পার্থক্য যদি ২৫ শতাংশের কম হয় সেক্ষেত্রে আপনি রোজা রাখতে পারবেন। তবে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এই পরীক্ষা দিয়ে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলেও ওষুধের বিষয়ে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ওষুধের মাত্রা, সময় ইত্যাদি ডাক্তারের কথামতো ঠিক করে নিলে ঝুঁকি অনেকটা কমানো যায়।
বিজ্ঞাপন
কিডনির সমস্যা না থাকলেও রোজার সময় সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা থাকে পানিশূন্যতার। কারণ পানিশূন্যতা কিডনির ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে। ভেবে দেখুন, ডায়রিয়া হলে কিডনি নষ্ট হয় কেন? কারণ ডায়রিয়াতে এত পরিমাণ পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায় যে, রক্তে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে কিডনি পর্যাপ্ত পানি পায় না ও পানিশূন্যতা তৈরি হয়। এভাবে কিডনি বিকল হয়ে যায়। রোজা রেখেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। দীর্ঘসময় পানির অভাবে থেকে কিডনি শকে চলে যেতে পারে।
তাই শুধু কিডনি রোগী নয়, পানিশূন্যতা নিয়ে সবারই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সেহরি ও ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। খনিজসমৃদ্ধ ফল খাওয়া ও পানীয় পান করার মাধ্যমে পানিশূন্যতা দূর করা যেতে পারে।
এএমপি/আরএমডি/এমএস
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন