শিক্ষক লাঞ্ছনায় সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসে বাধ্য করার ঘটনায় স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেন।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, নারায়গঞ্জের ডিসি, এসপি, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও ইউএনওকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ওই ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে আগামী তিনদিনের মধ্যে তা নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে (এসপি) প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ও স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে ইতোমধ্যে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার আগে শ্যামল কান্তি নামে ওই শিক্ষককে জনসম্মুখে কান ধরে উঠবস করান স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তরুণ প্রজন্মের অনেকে নিজের কান ধরে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
রুল জারি করার আগে সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান ও সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করার ঘটনায় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারির নির্দেশনা দেন।
গত ১৪ মে ইসলাম ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে মারধর করা হলে তিনি আহত হন। পরে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে তাকে কান ধরে ওঠ-বস করানো হয়।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের একটি চিঠি নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্যামল কান্তি ভক্তের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফারুকুল ইসলামের সোমবার (১৬ মে) স্বাক্ষর করা চিঠিতে শ্যামল কান্তি ভক্তকে চারটি অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা বলা হয়েছে।
এফএইচ/এনএফ/এমএস