ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

রূপপুরের ৫০০ কোটি ডলার লোপাট

শেখ হাসিনা-জয়-টিউলিপের দুর্নীতি অনুসন্ধানে হাইকোর্টের রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প স্থাপনে অনিয়ম ও দুর্নীতির পেছনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের (পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা এবং টিউলিপ সিদ্দিকীসহ) সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের অনুসন্ধানের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার ববি হাজ্জাজ।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম তমাল। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ওমর শরীফ।

এর আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প স্থাপনের পেছনে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে রিট আবেদনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) কেন‌ নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

গত ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ববি হাজ্জাজ এ রিট আবেদন করেন। তিনি রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। রিট আবেদনে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর, শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয়, টিউলিপ সিদ্দিক ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

অভিযোগ ওঠা পাঁচ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি প্রতিরোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না অভিযোগ তদন্তের পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে রিটে। পাশাপাশি অভিযোগের তদন্তের জন্য দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনে বলা‌ হয়, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারেরও‌ বেশি আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা এবং টিউলিপ সিদ্দিকীসহ আওয়ামী লীগ সরকারের সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এ বিষয়ে দুদককে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংস্থাটি।

রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ওমর শরীফ জানান, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকে আগস্টে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু দুদক কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়।

আগস্টের মাঝামাঝিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য প্রকাশ করে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামের একটি ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ আত্মসাতের কাজে তাকে সহায়তা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিক। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটমের কাছ থেকে একটি পারমাণবিক চুল্লি কেনার নামে এই বিশাল অর্থের লেনদেন করেন।

তবে ২৫ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল এমন খবরকে ‘গুজব’ ও ‘মিথ্যা’ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি।

ওইদিন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেন, নির্দ্বিধায় বলতে পারি এটি গুজব ও মিথ্যা। এ বিষয়ে আমাদের কোম্পানি রোসাটম (রূপপুর প্রকল্পে কাজ করছে) এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়েছে।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস