আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে হাইকোর্টের রুল
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনায় এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুই মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শুনানিতে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আদানি পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি কেন পুনর্বিবেচনা নয় জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
- আরও পড়ুন
- বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
- বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে, বকেয়া পরিশোধ চায় আদানি গ্রুপ
- বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়েছে আদানি
আইনজীবীরা বলেন, ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বিষয়ে অনুসন্ধান করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। ওই চুক্তির বৈধতা নিয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে চুক্তির বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে এ কমিটি গঠন করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া চুক্তির দর কষাকষি সংক্রান্ত সব নথিপত্র আদালতে দাখিল করতে বলেছেন।
আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।
এরইমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে এটার সমালোচনা করা বলা হচ্ছে, এটি একপক্ষীয় ও দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি। আইনজীবী হিসেবে এ বিষয়ে নোটিশ দিয়েছি, অন্যায্য ও অসম চুক্তি পুনর্বিবেচনা অথবা বাতিল করতে। এতে সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করি।
আজকে আদালত আমাদেরকে এবং রাষ্ট্রপক্ষকে শুনেছেন। আদালত একটা রুল জারি করেছেন। অসম ও অন্যায্য বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থি এই চুক্তি বাতিল করার জন্য কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেছেন।
একই সঙ্গে তিনটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন।
১। এই চুক্তিটার সইয়ের পূর্বে আদানি গ্রুপের সঙ্গে দর কষাকষির নথিপত্র এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
২। আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। যারা এই চুক্তিটির সব শর্ত আমাদের দেশের স্বার্থ পরিপন্থি কি আছে সেগুলো বিশ্লেষণ করে আদালতে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন।
৩। আরেকটা কমিটি গঠন করে এই চুক্তির যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করে একটা প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম আবেদনকারী হয়ে ১২ নভেম্বর রিট করেন।
এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস