ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

শেখ হাসিনাসহ পরিবারের অন্যদের নামে প্লট বরাদ্দ তদন্তে কমিটি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানাসহ ছয়জনের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ কেন বাতিল হবে না- মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ২০০৯ সাল থেকে রাজউকের প্লট বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগামী ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন আইনজীবী জসিম উদ্দিন সরকার ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন।

১০ আইনজীবীর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান ও নূর মুহাম্মদ আজমী।

রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ২৬ হাজার প্লটের মধ্যে ৮৫৬টি আদালতে পর্যালোচনা করে দেখিয়েছি যে, অনেকের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যাদের শুধু ঠিকানা লেখা আছে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও লন্ডনের ঠিকানা। অসংখ্য আইডিতে তথ্য নেই। শুধু দেওয়া আছে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ। আদালত রুলসহ আদেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা পরিবারের নামে ৬০ কাঠা প্লটসহ সব অবৈধ প্লট বরাদ্দ কেন বাতিল করা হবে তা রুলে জানতে চেয়েছেন। বরাদ্দের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি করেছেন। এ কমিটির দায়িত্ব ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত কত প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত করা।

আরও পড়ুন

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী আবেদনকারী হয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর রিট করেন। রিট আবেদনকারী ১০ আইনজীবী হলেন- মো. রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, মো. গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, মো. বেলায়েত হোসেন সুজা, কামরুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান, মো. জিল্লুর রহমান ও ইসমাইল হোসেন।

রিটে এসব প্লট বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত এবং সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া এসব বরাদ্দের বিষয়ে তদন্ত করতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

রিট করার পর রিটকারী আইনজীবী জানিয়েছিলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নিজের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়) ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এছাড়া প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের তালিকায় আছেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলেমেয়ে। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন। প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনে সব প্লট একত্রে সন্নিবেশিত করার সুযোগ দেয় রাজউক।

রাজউকের আইন ও বিধি অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শুধু এই ৬টি প্লট নয়, এমন অন্যান্য প্লটের বরাদ্দ চ্যালেঞ্জ করে এই রিট দায়ের করা হয়।

আবেদনে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউকের চেয়ারম্যান, পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রুপান্তিকে বিবাদী করা হয়েছে।

এফএইচ/কেএসআর/এমএস