আইন উপদেষ্টা
বিচারপতিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের ফোরাম পুনরুজ্জীবিত হলো
অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফেরায় বিচারপতিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের ফোরামটি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রোববার (২০ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের রিভিউ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই পুনর্বহাল করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে।
রোববার (২০ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন:
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনরায় কার্যকরী হয়েছে। এটা নিয়ে কনফিউশন ছিল, আদালতের রায়ের কারণে সেই কনফিউশন দূর হয়েছে। সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল এখন ফুললি ওপারেশনাল করা যাবে।
তিনি বলেন, এই সময়ে এটার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আমাদের হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন উনাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রচুর কমপ্লেইন রয়েছে। উনারা জুলাই গণবিপ্লবে যে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ছিল, সেই শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এজন্য ছাত্র-জনতার অনেকের ক্ষোভ রয়েছে। এখন এ সমস্ত ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার পথ খুলে গেছে।
উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, উচ্চ আদালত উচ্চ আদালতের মতো করে ব্যবস্থা নেবে। ছাত্র-জনতা এটিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য একটি ফোরাম পেলো, আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে চাই।
সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করা আছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের সব থেকে সিনিয়র বিচারপতিকে নিয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। আজকেই যদি কেউ কমপ্লেইন দেয়, তবে সেই প্রসেস শুরু করে দেবে। আলাদা করে নোটিফিকেশন দেওয়ার দরকার নেই, এটি সংবিধানে বলাই আছে।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল যখন বাদ ছিল, তখন উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কোনো ফোরাম ছিল না। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মত ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের প্রশাসনের মধ্যে ছিল না। কারণ উনাদের ফরমায়েশি রায় হচ্ছিল। আপনারা জানেন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কি রকম রায় হয়েছে, তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেবে না। এ রকম একটি বাক-স্বাধীনতা রুদ্ধকারী রায় হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বহু মানুষ মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ পাননি বরং নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বিচারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মতো সদিচ্ছা এখন যারা প্রশাসনে আছেন, তাদের আছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আর এই সদিচ্ছা বাস্তবায়নের ফোরামটাও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বা সক্রিয় হয়েছে।
আরএমএম/এসএনআর/এমএস