ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল

সাইবার সিকিউরিটি আইনের অন্যতম ভিকটিম জবির খাদিজাতুল কুবরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:০৬ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সাইবার সিকিউরিটি আইনের অন্যতম ভিকটিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। তার সবচেয়ে নির্মম দিক ছিল হাইকোর্টের জামিনের পরও আপিলেট ডিভিশন এর তারিখ বারবার পিছিয়েছে। তাকে বিচার ছাড়াই বারবার জেলে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‌‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ সংশোধন বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, পর্যায়ক্রমে সব ধরনের কালা-কানুন থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা হবে। আমাদের অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই আমরা যাবো। তবে এ মুহূর্তে পুরো আইন বাতিল করা হবে নাকি কেবল স্পিচ অফেন্স বাতিল করা হবে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। কিন্তু আলটিমেটলি এটা বাতিল হবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্যতম ভিকটিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার। তার সবচেয়ে নির্মম দিক ছিল হাইকোর্ট জামিন দিয়েছিল তার পরে আপিলেট ডিভিশন এর তারিখ বারবার পিছিয়েছে। যেন বিচার ছাড়ায় তাকে বারবার জেলে রাখা হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে তখনকার যিনি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন উনাকে বলেছিলাম, উনি এখন নেই ওনার অনুপস্থিতিতে আমি বলতে চাই না। যাই হোক আমার মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা সবার মতামত শুনেছি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগের বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীকালে যখন নতুন আইন করা হবে, তখন তার মৌলিক একটি অনুচ্ছেদে নাগরিকদের সাইবার সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে অবশ্যই নারী ও শিশুদের বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। সেজন্য এরকম সেমিনার অব্যাহত রাখা হবে।

সভার শুরুতে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী উপস্থাপন করা হয়। এরপর এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে অনেকেই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন করার পরামর্শ দেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, এরই মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাগরিক পরিসরে একটি ধারণা আছে আইন মন্ত্রণালয় বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলেই সব মামলা প্রত্যাহার করে দিতে পারে। এটা সত্যি না। একটি মামলা বিভিন্ন পর্যায় বা স্তরে থাকে। সব মামলা ইচ্ছে করলেই প্রত্যাহার করা যায় না। মামলা প্রত্যাহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যে মামলার কনভিকশন হয়ে যায়, সেখানে যিনি কনভিকটেড (দোষী সাব্যস্ত) হয়েছেন ওনার আবেদন ছাড়া মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, অনেকেই বলে থাকেন ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের মামলাগুলো কেন প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। মামলায় যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়ে যায়, যত ভুয়া মামলাই হোক, চাইলেই তা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। এজন্য একটি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হয়।

সভায় অংশ নেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম রব্বানী, বিশিষ্ট আলোকচিত্রশিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, ইংরেজি দৈনিক দ্য ঢাকা ট্রিবিউন এর নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্যতম ভিকটিম খাদিজাতুল কুবরা প্রমুখ।

এফএইচ/এমএএইচ/