ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ আবেদন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪৯ এএম, ২৮ আগস্ট ২০২৪

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ (১৩তম) সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করা হয়েছে। রিভিউতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করার আর্জি জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচজন সংক্ষুব্ধ নাগরিকের পক্ষে অ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন ভুঁইয়া এ আবেদন করেন। আবেদনকারী হলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম. হাফিজ উদ্দিন খান, স্থপতি ড. তোফায়েল আহমেদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর ঢাকা মহানগরীর সম্পাদক জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং অপরজন জাহরা রহমান। তারা মনে করেছেন এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ফলে ভোটাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল এবং সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) ৫০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে রায়ের অনুলিপি ও অন্যান্য নথিপত্র মিলিয়ে ৮০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট রয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন ভূঁইয়া।

এর আগে গত রোববার (২৬ আগস্ট) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) এ আবেদন করা হয়েছে।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। সে সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এই রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।

সে রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। সে রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মতামত দেন আদালত। আর এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন এ বি এম খায়রুল হক।

তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর ২০০৫ সালে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ। দীর্ঘ বিরতির পর শুনানি হয়। আদালত এ মামলায় আটজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন।

তাদের মধ্যে পাঁচজন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। তারা হলেন, ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।

অপর অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার মরহুম রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে তাদের প্রস্তাব আদালতে তুলে ধরেন। এছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দেন।

এফএইচ/এসএনআর/এএসএম