ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

হাসিনা-কাদের-নওফেলসহ ৫০০ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার তিন অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:২৩ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মেয়র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় পৃথক তিনটি অভিযোগের বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে।

এরমধ্যে একটি অভিযোগে ৭৭ জন, একটিতে ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য অভিযোগটিতে ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি অভিযোগে ৮১৯ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বুধবার (২১ আগস্ট) ধানমন্ডির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এসব অভিযোগ করা হয়।

এরমধ্যে কোটা আন্দোলনে গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী মো. আসিফ ইকবালের বাবা বগুড়ার শ্রীপুর উপজেলার রাধানগরের নোহাটা গ্রামের বাসিন্দা এম এ রাজ্জাক একটি অভিযোগ করেন।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শিক্ষার্থী শেখ শাহরিয়ার বিন মতিনের বাবা আব্দুল মতিন অন্য একটি অভিযোগ করেন। অপর অভিযোগটি বিমানবন্দর থানা এলাকার শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা বরিশালের মো. জাকির হোসেনের করা।

আরও পড়ুন

আবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতাকে হত্যা করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপি এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতার নির্দেশ এবং পরিকল্পনায় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য, র‌্যাব কর্মকর্তা ও র‌্যাব সদস্য, অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আন্দোলনকারী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে সমূলে বা আংশিক নির্মূলের উদ্দেশে তাদের ওপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ৮১৯ জন নিহত হন।

এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম হন এবং এক হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরতরে অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন। কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা ছাড়াও কমপক্ষে ৩২ জন শিশু নির্মম গণহত্যার শিকার হয়।

এক অভিযোগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইলিয়াস আলী মোল্লা, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশিদের নাম উল্লেখসহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আরেক অভিযোগে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ, র‌্যাব, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আবু সাঈদ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে মোট ৪৩৯ জনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগে বলা হয়।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে পৃথক এসব আবেদন করা হয়। তাদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আছেন অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

অন্য এক মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মাহতাব উদ্দিন আহমদ, আ জ ম নাছির উদ্দিন, রেজাউল করিম চৌধুরী ও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীসহ ৭৭ জন। অন্য দুটি আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর ধারা ৮ অনুসারে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১) (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

 এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস