আদালতকে শ্রাবণ
ডিবি আমাকে বাসা থেকে ধরে এনেছে, আমি কিছুই জানতাম না
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের অভিযানে লাঠিসোঁটা, ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ (৩৮) বিএনপির সাত নেতাকর্মীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে আটকের সময় নয়াপল্টনে অভিযান বা মামলার বিষয়ে কিছু জানতেন না বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ জুলাই) এ মামলার রিমান্ড শুনানি চলাকালে শ্রাবণ আদালতকে বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। কয়েকদিন আগে শিল্পকলায় আমার ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমি বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছি।’
‘(মঙ্গলবার রাতে) আমি বিএনপি কার্যালয়ে ছিলাম না। ডিবি আমাকে বাসা থেকে ধরে এনেছে। সকালে জানতে পারলাম আমাকে এ মামলায় কোর্টে পাঠানো হচ্ছে। এখন আমাকে রিমান্ডে দিলে নির্যাতন করা হবে’- বলেন সাবেক এই ছাত্রদল সভাপতি।
এদিন শ্রাবণসহ গ্রেফতার সাত আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কবির হোসেন হাওলাদার।
অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিক আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে দুদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম (৪৭), তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন (৩০), বিএনপি কর্মী শাহাদাত হোসেন (৩২), মো. টেনু (৩৮), মনির হোসেন (২৫) ও বরকত হাওলাদার (৩৭)।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নয়াপল্টন কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে লাঠিসোঁটা, বিস্ফোরকদ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের তথ্য জানান ডিবিপ্রধান। এরপর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে ডিবি। পরে তাদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
লাঠিসোঁটা ও ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ ২৬ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
- আরও পড়ুন
- নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযানে ককটেল-অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৭
- বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা, ক্রাইম সিন ফিতায় ঘেরা
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা মহানগর এলাকায় নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটিয়ে সরকারকে বিপাকে ফেলাসহ দেশকে অস্থিতিশীল করতে বিএনপি নেতারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানে ৫৫টি ককটেল, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর খাটের তোষকের নিচ থেকে দুটি পাইপগান, পুরোনো তিনটি ওয়ান শ্যুটারগান, একটি পিস্তল ও ২১০টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
জেএ/এমকেআর/জিকেএস