কোটার বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি শুরু
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল ও আইনি লড়াইয়ে শামিল হওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের করা পৃথক দুটি আবেদনের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়েছে।
১১টা ৪৩ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে। শুরুতেই শুনানি করছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ( এএম) আমিন উদ্দিন।
এর আগে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল ও আইনি লড়াইয়ে শামিল হওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি এক সঙ্গে হবে বেলা সাড়ে ১১টায় ঠিক করেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানির শুরু হলো।
অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ এ সময় ঠিক করে আদেশ দেন।
এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে করা আবেদন শুনানি নিয়ে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর করা আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির জন্য বুধবার (১০ জুলাই) দিন ঠিক করা হয়।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের চেম্বার এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ( এএম) আমিন উদ্দিন। রিট কারীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে শুনানি ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।
আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি জানান, আবেদনটি শুনানির জন্য বুধবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে আবেদন দায়ের করার জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন ওই দুই শিক্ষার্থী। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হলফনামা করার অনুমতি দেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর সূর্যসেন হলের সাবেক সাহিত্য সম্পাদক, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়াসহ দুজন এ আবেদন করেন। তার সঙ্গে উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান রয়েছেন।
অনুমতির পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনটি দায়ের করা হয়, যা চেম্বার আদালতে শুনানি হয়।
দুই শিক্ষার্থীর আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদনটি করেন। চেম্বার আদালত আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পরিপত্রের পাশাপাশি এর আগে দেওয়া হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের আদেশ প্রতিপালন না করা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য অধিকারের প্রতি অবজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হয়ে ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
রিট আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আপিল বিভাগ নট টুডে বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ওই দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন।
এফএইচ/এসএনআর/এএসএম