ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব: নতুন নাকি প্রচলিত আইনের প্রয়োগ?

মুহাম্মদ ফজলুল হক | প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তার দুর্নীতির খবর নিয়ে তোলপাড় চলছে। এসব কর্মকর্তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে নগদ অর্থ, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অস্বাভাবিক সম্পদের মালিকানা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে তুমুল আলোচনা।

প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু সম্পদের হিসাব দিতে সরকারি চাকরিজীবীদের তেমন আগ্রহ নেই। আবার তাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর, বিভাগ ও সংস্থার উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো নেই। এ পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টি বিধিমালা আছে- সে পর্যন্তই রয়েছে।

‘যদি নতুন আইন না হয় তা হলে আমাদের এগজিস্টিং যে আইনটি আছে, যদি সেটিও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে সেখানে অনেকাংশে রিফিউজ করা সম্ভব। আমরা নতুন আইন করার পাশাপাশি বর্তমান আইনটি বাস্তবায়নের জন্য বলেছি রিট আবেদনে।’-রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস

সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়, সংস্থা, দপ্তর ও বিভাগগুলো বিচ্ছিন্নভাবে কর্মকর্তাদের হিসাব জমা নেয়। সেটা দায়সাড়া গোছের। কিন্তু সেই সম্পদ বিবরণীর বিষয়ে কোনো খোঁজ-খবর নেওয়া হয় না। এছাড়া সরকারি চাকরিতে কর্মরত কোনো ব্যক্তির অস্বাভাবিক সম্পদ থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়ার নজির খুব কম।

যদিও সাম্প্রতিক সময়ে অবসরে যাওয়ার পর এবং কর্মরত অবস্থায় বেশ কয়েকজনের অস্বাভাবিক সম্পদের বিষয়টি সামনে এসেছে। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে এক দশকেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন বেনজীর আহমেদ। প্রতিবারই দায়িত্ব পালনের সময় আলোচনায় ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেন। পরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বিপুল সম্পদ থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে দুদক আদালতে এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করে।

আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত আদালত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে যে সব সম্পদ জব্দ বা ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তার মধ্যে আছে ঢাকার গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব, তিনটি শেয়ার ব্যবসার বিও অ্যাকাউন্ট, প্রায় ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।

‘সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে, সেটি প্রয়োগ করা দরকার। নতুন আইন করতে হবে বলে আমি মনে করি না। বর্তমানের আইনটি প্রয়োগ না হলে পরে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।’-অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সাবেক সভাপতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মো. মতিউর রহমান। ঈদুল আজহার আগে মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ ১৫ লাখ টাকার ছাগল ‘কিনে’ আলোচনায় আসে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে ওই তরুণ মতিউর রহমানের ছেলে। যদিও তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে তা অস্বীকার করেন। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দীন হাজারী সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে।

এরপরই মতিউর রহমানের বিপুল সম্পদের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে। একই সঙ্গে প্রকাশিত হয় দেশে ও বিদেশে তার সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের বিলাসবহুল জীবনের খবর।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের নামে এখন পর্যন্ত ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং দুটি শিল্প-প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

 

এরই ধারাবাহিকতায় দুদকে আবেদন এবং সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব যেন নেওয়া হয় ও সেগুলো যেন প্রকাশ করা হয়, তার নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘রিটে আমি বলেছি, প্রথমত, কেন রিট করেছি, সেটা হলো যে আইনটি এগজিস্টিং (বর্তমানে) আছে সেটি বাস্তবায়ন করার জন্যে। সেই আইনটি যদি প্রপারলি বাস্তবায়ন করা যায় তা হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি অনেকাংশে রোধ করা যাবে।’

‘সম্পূর্ণ রোধ করা না গেলেও অনেকাংশ রোধ করা যাবে। আর সেখানে অবশ্যই নতুন আইনের প্রয়োজন আছে, ইথিক্যাল স্ট্যান্ডের জন্য, তাদের আচরণবিধির জন্য নতুন আইনের দরকার আছে। যদি নতুন আইন না হয় তা হলে আমাদের এগজিস্টিং যে আইনটি আছে, যদি সেটিও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে সেখানে অনেকাংশে রিফিউজ করা সম্ভব। আমরা নতুন আইন করার পাশাপাশি বর্তমান আইনটি বাস্তবায়নের জন্য বলেছি রিট আবেদনে।’ বলছিলেন সুবীর নন্দী দাস।

‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের বিষয়ে আমি মনে করি যে আইন আছে সেই আইনটি প্রয়োগ করা দরকার। তার জন্য নতুন করে আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন নেই। এই আইন প্রয়োগ করেই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। নতুন আইন করলে আরো জটিল প্রক্রিয়া ধারণ করবে।’- অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান, প্রধান আইন কর্মকর্তা, দুদক

তবে, গত ২৩ জুন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারি কর্মকর্তা চাকরিতে প্রবেশের সময় সম্পদের হিসাব দাখিল করেন এবং সময় সময় তারা সেটা জমাও দেন। এ নিয়ে নতুন করে কোনো আইন করার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি।

জানা গেছে, পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু হয়। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় নিয়ম যুক্ত করা হয়। দশকের পর দশক ধরে এ নিয়ম পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অণুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাসুদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটি একেবারে প্রতিপালিত হচ্ছে না– তা বলা যাবে না।

প্রচলিত আইনের প্রয়োগ জরুরি

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে, সেটি প্রয়োগ করা দরকার। নতুন আইন করতে হবে বলে আমি মনে করি না। বর্তমানের আইনটি প্রয়োগ না হলে পরে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।’

‘দুর্নীতি দমন করতে নতুন কোনো আইনের দরকার নেই। শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছার দরকার, আপনি দুর্নীতি দমন করতে চান কি না।’ অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, সাধারণ সম্পাদক, সংবিধান বাস্তবায়ন কমিটি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি

মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছেন। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমরাও চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। দেশের মানুষও দেশটা দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে দেখতে চায়। আমার মনে হয় সরকারের সঙ্গে সঙ্গে সবগুলো সংস্থা, সচেতন নাগরিক এবং গণমাধ্যমকে ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের সবাই মিলে যদি শক্ত হাতে দুর্নীতি রোধ করার চেষ্টা না করা হয়, তাহলে লাল ফিতা বা আমলাতান্ত্রিকতার দৌরাত্ম্য এমন পর্যায়ে চলে যাবে তখন রশি টেনেও কোনো লাভ হবে না।’

সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ প্রকাশের আইন নিয়ে দুদকের প্রধান আইন কর্মকর্তা ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের বিষয়ে আমি মনে করি যে আইন আছে সেই আইনটি প্রয়োগ করা দরকার। তার জন্য নতুন করে আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন নেই। এই আইন প্রয়োগ করেই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। নতুন আইন করলে আরো জটিল প্রক্রিয়া ধারণ করবে।’

খুরশীদ আলম খান বলেন, সরকার, রাষ্ট্র, দেশ ও জাতির স্বার্থে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে।

‘আচরণবিধি না মানলে তা অসদাচরণ। তাই সম্পদের হিসাব না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা উচিত। এতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভীত হবেন এবং দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।’- অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, চেয়ারম্যান, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ

সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমান আইন যথেষ্ট নাকি নতুন আইন করার প্রয়োজন রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবিধান বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব জাগো নিউজকে বলেন, ‘নির্দ্বিধায় ও প্রচণ্ড আস্থার সঙ্গে বলছি, এ বিষয়ে নতুন কোনো আইনের প্রয়োজন নেই। আমাদের যে প্রচলিত আইন, বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নীতিমালা বিধি ১৯৭৯ অন্যান্য রুলস, বাস্তবায়ন হলেই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব।’

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের বিবরণী দাখিলের বিষয়ে আদেশ ও রুল জারির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ‘কোর্টের এতগুলো নির্দেশনা প্রতিপালন করতে পারবেন কি না এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে আদালত আমার মতামত জানতে চাইলে হাইকোর্টকে জানিয়েছি যে সম্ভব না হলেও অন্তত তিন মাসের মধ্যে একটা অগ্রগতি রিপোর্ট দিতে। সেটি করা সম্ভব হবে।’

সৈয়দ মামুন মাহবুব আরো বলেন, ‘সরকারের সংশ্লিষ্ট যারা দুর্নীতি দমন করতে চান, সরকার বা দুর্নীতি দমন কমিশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি দুই মাসের মধ্যে সরকারের সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, দপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার ও আইজিপির সম্পত্তির হিসাব নিতে পারেন এবং তাতে পুরাতন তথ্যের দরকার নেই।’

সৈয়দ মামুন মাহবুব যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘চলতি বছরের জুলাই মাসে সম্পদের হিসাব নিয়ে আবার এক বছর পর আগামী বছরের জুলাইয়ের নির্দিষ্ট দিনে হিসাব নিক। এইটুকু করতে পারলেও দুর্নীতির বিষয়ে কাজে দেবে।’

ভারতে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার এই আইনটি আছে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জানান, ভারতে যেদিন সরকারি কর্মকর্তা চাকরিতে যোগ দেন, সেদিন তার সম্পদের একটা হিসাব দেন। আবার যখন তিনি অবসরে যান তখন সম্পদের একটা হিসাব দেন। আপনারা জানেন ভারতের জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটসহ (ইডি) বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে চাকরিতে যোগদান এবং অবসরে যাওয়ার সম্পদের হিসাব যদি ১০ শতাংশের মধ্যে থাকে অর্থাৎ ১০ শতাংশ সম্পদ বাড়ে তা হলে তারা আর এগোয় না। ১০ শতাংশের বেশি সম্পদ হলেই তদন্ত শুরু করে।

‘এটা কোনো রকেট সায়েন্স না যে চাইলেই সব করা সম্ভব। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা বা আজ যিনি বিচারপতি (বিচারক) নিয়োগ পেলেন কিংবা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে নিয়োগ পেলেন যদি উনার কাজে যোগদানের পর থেকেই তিনি প্রতি এক বছর পর পর তার হিসাব দেন, দুর্নীতি দমন করতে নতুন কোনো আইনের প্রয়োজন হবে না বা নেই।’

তবে সৈয়দ মামুন মাহবুব জোর দিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতি দমন করতে নতুন কোনো আইনের দরকার নেই। শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছার দরকার, আপনি দুর্নীতি দমন করতে চান কি না।’

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু মানুষ টাকা-পয়সা ও অবৈধ সম্পদের দিকে পা বাড়ায় আবার পরবর্তীসময়ে তারাই মামলা খেয়ে দেশ থেকে পালায়। তাহলে সেই অর্থ-সম্পদ বানিয়ে লাভটা কী হলো। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। সে যে কেউ হোক না কেন দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই।

এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে বলেন, নিয়ম অনুসারে প্রতি পাঁচ বছর পর সরকারি কর্মচারী তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেবেন। আগে তা প্রতি বছর দেওয়ার নিয়ম ছিল। এখন পাঁচ বছরেও অনেকে তা দিতে চান না। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসন গড়ে তোলার স্বার্থে এ আচরণবিধি কঠোর ও কঠিনভাবে সরকারের প্রয়োগ করা উচিত। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী অন্য মন্ত্রণালয় নিশ্চুপ থাকলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যেহেতু আচরণবিধি জারি করেছে, তাই তাদের মুখ্য ভূমিকা নেওয়া উচিত।

মনজিল মোরসেদ বলেন, আচরণবিধি না মানলে তা অসদাচরণ। তাই সম্পদের হিসাব না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা উচিত। এতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভীত হবেন এবং দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।

এফএইচ/এমএমএআর/জিকেএস

আরও পড়ুন