সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের বিধি বাস্তবায়নের নির্দেশ
সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সম্পদ বিবরণীর ঘোষণা ও সময়ে সময়ে দাখিলের বিধি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২২ অক্টোবর দিন রেখেছেন।
একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের অবৈধ সম্পদ অর্জন রোধে প্রয়োজনীয় নীতিমালা, আইন ও নীতি করতে বিবাদীদের ভয়াবহ ব্যর্থতা এবং কথিত নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ ও ডিজিটাল মাধ্যমে সময়ে আপডেট করার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলান তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
- আরও পড়ুন
সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশ চেয়ে রিট
সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশের রিট শুনানি আজ
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মির্জা গালিব ও অ্যাডভোকেট আশরাফুজ্জামান।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী একেএম ফজুলল হক।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিট দায়েরের পর আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব যেন নেওয়া হয় এবং সেগুলো যেন প্রকাশ করা হয়, তার নির্দেশনা চেয়ে রিট দাখিল করেছি। সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ের আয়ের কিছু অফিসিয়ালের বিপুল পরিমাণে সম্পদের খবর প্রকাশ হয়েছে। যে অফিসার হোক না কেন তিনি কীভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেন সে বিষয় জানতে চেয়েছি। কারণ সরকারের একটি রুলস আছে।
ওই রুলস অনুযায়ী, কোনো সরকারি অফিসার পুর্বানুমতি ছাড়া একটি বিল্ডিংও নির্মাণ করতে পারেন না। ইনভেস্ট করতে পারে না। তিনি আইন থাকার পরও কীভাবে এত বিপুল সম্পত্তি অর্জন করলেন। চাকরির প্রবেশকালে সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হবে এবং প্রতি বছর কত বাড়লো বা কমলো তার বিবরণী দাখিল করার আইন রয়েছে। পরবর্তী তা সংশোধন করে প্রতি পাঁচ বছর পর পর দাখিল করার বিধান করা হয়। কিন্তু সর্বশেষ ২০০৮ সালে কিছু কর্মকর্তা দাখিল করেছিলেন। ২০০৮ সালের পরে সরকার চাইলেও কর্মকর্তারা সেটা দেননি। আমরা বলেছি আইনটা প্রতিপালন করার জন্য।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ১৩ বিধিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের নিকট তার অথবা তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি এবং মোট ৫০ হাজার টাকা বা ততধিক মূল্যের অলংকারাদিসহ স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা করবেন। প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী প্রতি ৫ বছর অন্তর প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস বৃদ্ধির হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাখিল করবেন।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম