ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মানবতাবিরোধী অপরাধ

গোপালগঞ্জের চারজনের মামলায় আইওর জেরা ১ আগস্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ১৭ মে ২০২৪

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গোপালগঞ্জের নিজামুল হকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) জবানবন্দি গ্রহণ শেষে জেরার কার্যক্রমের জন্য আগামী ১ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৮ এপ্রিল এ দিন ঠিক করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম ও বিচারক এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।

আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) জবানবন্দি গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে জেরার কার্যক্রম শেষ করা হয়নি। তাই আইওর জেরার জন্য আগামী ১ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, এ মামলায় মোট আসামি পাঁচজন। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে, বাকি তিনজন পলাতক। এ মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

এর আগে, ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন প্রস্তুত হওয়ার কথা জানান সংস্থার তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (বর্তমান প্রধান সমন্বয়ক) এম সানাউল হক। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এটি তদন্ত সংস্থার ৭৭তম প্রতিবেদন।

২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর শুরু হওয়া তদন্ত শেষ হয় ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও মরদেহ গুমসহ চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগ
১৯৭১ সালের ২৮ জুন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী রাজাকার সদস্য আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকার মো. ইনায়েত হোসেন মিয়া, নিজামুল হকসহ সশস্ত্র ১২-১৩ জন নৌকাযোগে সাবেক মহকুমা ও বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীর ছোট বাহিরবাগ গ্রামের আউয়াল হক মিয়ার বাড়ির পাশের ঘাটে নামে। নেমেই এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

তখন আওয়াল মিয়ার জামাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুমের খোঁজ করে তারা। তাকে না পেয়ে আওয়াল মিয়া ও তার ছেলে সিরাজ মিয়াকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক আটক ও অপহরণ করে নৌকায় তুলে পাকিস্তানি আর্মিদের কাছে নিয়ে যায়। পরে জামাতা মাসুমকে হাজির করার শর্তে আওয়াল মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সিরাজ মিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা ও মরদেহ গুমের অভিযোগ আনা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ
১৯৭১ সালের ৩ জুলাই কাশিয়ানী থানার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম মিয়াকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক আটক ও অপহরণ করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সদস্যদের কাছে নেওয়া হয়। রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়া, ইনায়েত হোসেন, নিজামুল হকের সহায়তায় আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে আব্দুস ছালামকে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়।

তৃতীয় অভিযোগ
১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকার ইনায়েত হোসেন মিয়া, নিজামুল হকের একটি সশস্ত্র দল গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীর সিতারামপুর গ্রামে যায়। সেখানে ৯টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তারা।

ওই গ্রাম ও আশপাশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল কাদের মোল্লা, মকবুল হোসেন, মো. রওশন আলী মোল্লা, আনোয়ার মীর ও আজাহার শেখকে ধরে নিয়ে যান। এরপর পাকিস্তানি আর্মিদের সহায়তায় রাজাকাররা কাদের মোল্লাকে বেয়নেট খুঁচিয়ে এবং মকবুল হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

চতুর্থ অভিযোগ
১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে এই রাজাকাররা ও পাকিস্তানি বাহিনীর সশস্ত্র দল কাশিয়ানীর রামদিয়া বাজারে প্রবেশ করে। সেখানে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনের অন্তত ৫০-৬০টি দোকান লুটপাট করে তারা। এরপর সেগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে প্রিন্সিপাল আয়ুবুর রহমানের বাড়িতে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে।

এফএইচ/এমকেআর/এমএস