ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

কেউ যাতে নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, শঙ্কার মধ্যে না থাকি: ড. ইউনূস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কেউ যাতে নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, শঙ্কার মধ্যে না থাকি।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় জামিনের বিষয়ে শুনানি ও হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই নতুন বছর যাতে শান্তিপূর্ণ হয়। এই নতুন বছরে আমরা নিজেদের যেন নতুন করে আবিষ্কার করতে পারি। নতুন বছরে তরুণ সম্প্রদায়কে যাতে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখাতে পারি। আমরা শান্তিময় পরিবেশে বসবাস করতে পারি। আমরা সব জাতিকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি, সেটার জন্য সবাই মিলে একত্রে চেষ্টা করি, এটাই দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন। আমরা সুন্দর দেশ গড়ে তুলি, সুন্দরভাবে বাস করি, কেউ যাতে নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, শঙ্কার মধ্যে না থাকি। শঙ্কামুক্তভাবে জীবনযাপন করি, আইনের শাসনের মধ্যে জীবনযাপন করি।’

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই, যার যার মতো করে বিশেষ করে তরুণদের জীবনে যে স্বপ্ন আছে এবং আরও স্বপ্ন দেখবে।

বিভিন্ন মামলায় মাসে দুবার করে হাজিরা দিতে হচ্ছে আপনাকে এ বিষয়ে কিছু বলবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমার তো কিছু করার নেই, আদালতের আদেশ তো হাজির হতেই হবে।

এসময় সবাইকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে আদেশ দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত তাদের জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসসহ চারজনের করা আপিল শুনানির জন্য আগামী ২৩ মে ঠিক করেছেন আদালত।

অন্য তিনজন আসামি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

আরও পড়ুন

জামিনের মেয়াদ বাড়াতে এবং আপিল শুনানি মুলতবি চেয়ে ড. ইউনূসসহ চার কর্মকর্তার করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল মঙ্গলবার (১৬এপ্রির) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ আদেশ দেন।

তাদের পক্ষে আদালতে আজ শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এস এম মিজানুর রহমান। মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বরত চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। এসময় ড. ইউনূসসহ অন্য তিন বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা এই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি এ রায় দেওয়া হয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আপিল সেদিন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ও আদেশ চলতি বছরের ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।

পরে ধার্য দিনে গত ৩ মার্চ আপিল ট্রাইব্যুনাল চারজনের জামিনের মেয়াদ আজ ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ান। সেই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন ঠিক করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আসে এবং শুনানি হয়।

এর আগে সকালে চারজনের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। বেলা ১১টার দিকে ড. ইউনূস ও অপর তিন কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত হন।

এর আগে তৃতীয় শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ৩ মার্চ দেওয়া আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন (ক্রিমিনাল রিভিশন) করেছিলেন মামলার বাদী। এই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাননি উল্লেখ করে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসসহ চারজনের করা আপিলের শুনানি আজ মুলতবি চান তাদের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সেই সঙ্গে এই আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চারজনের জামিনের আরজি জানিয়ে আরেকটি আবেদন দেন তিনি।

অন্যদিকে, মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান শুনানিতে বলেন, জামিনের মেয়াদ কত দিন বাড়াবেন, তা আদালতের বিষয়। তবে আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করার ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার রাখলে ভালো হয়। শুনানি নিয়ে আদালত আপিলে বিষয়ে কোনো কিছু না বলে জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে আদেশ দেন।

এফএইচ/এসএনআর/এমএস