ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

বাজি ফোটানো নিয়ে মারামারি

ছেলে-মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন বৃদ্ধ বাবা

জাহাঙ্গীর আলম | প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পশ্চিম আগারগাঁও এলাকার মো. আল আমিন আলমের ৮ বছর বয়সী ছেলে মো. আলহাজ। ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের সময় অনন্দ উদযাপনের অংশ হিসেবে বাজি ফোটাচ্ছিল আলহাজ। এতে বিরক্ত হয়ে শিশু আলহাজকে চড়-থাপ্পড় মারেন প্রতিবেশী রবিউল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় মারামারি। এসময় নিজের সন্তানদের বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের আঘাতে গুরুতর আহত হন আল আমিন আলমের বাবা মো. খলিল (৬৫)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসাপাতালে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর শেরেবাংলা নগর থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত খলিলের ছেলে আল আমিন আলম। তদন্ত শেষে গত ৩০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস এম আল মামুন। মামলার চার্জশিটে চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশিট দাখিল করা হয়।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- মো. মিলন (২৮), রফিকুল ইসলাম রফিক (২৬), শফিকুল ইসলাম শফিক (১৮), মো. কাউসার (২৫) ও মো. রবিউল (১৬)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের আনন্দ উদযাপনের জন্য বাদীর আট বছর বয়সী ছেলে আলহাজ বাসার সামনে বাজি ফোটাচ্ছিল। এতে বিরক্ত হয়ে আলহাজকে চড়-থাপ্পড় মারেন প্রতিবেশী রবিউল। এরপর বাদীর ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বিষয়টি তার চাচা রহমানকে জানায়। রহমান বিষয়টির প্রতিবাদ করায় আসামি রবিউল হাতে থাকা বেলচা দিয়ে রহমানের মাথায় আঘাত করেন। ওইসময় বাদীর বোন শরুফা আক্তার পরানী তার ভাই রহমানকে রক্ষার চেষ্টা করলে আসামি মিলন, রফিকুল, শফিকুল ইসলাম, রবিউল ও কাউসার মিলে রহমান ও শরুফা আক্তার পরানীকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন।

এসময় বাদীর বাবা মো. খলিল আসামিদের প্রতিহতের চেষ্টা করলে তারা তাকেও এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। এতে খলিল আহত হন ও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হৃদরোগ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে মারা যান খলিল।

চার্জশিটে আরও বলা হয়, চিকিৎসা সনদপত্র এবং ভিকটিমের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনাসহ ঘটনার পারিপার্শ্বিক অবস্থার আলোকে এটাই সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আসামিদের এলোপাতাড়ি আঘাতে ভিকটিম খলিল অসুস্থ হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

অভিযুক্ত আসামি রবিউল ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল বিধায় তার বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস এম আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় দোষীপত্র দেওয়া হয়েছে। বাদীপক্ষ এবং আসামিপক্ষ সবাই একই এলাকার হওয়ায় সবাই সবার পরিচিত। অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে তিনজন কারাগারে আছেন এবং দুইজন জামিনে রয়েছেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আর কোনো আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’

মামলার বাদী আল আমিন আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে আমার বাবাকে তারা হত্যা করেছেন। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছেন তাদের বিচার চাই।’

জেএ/কেএসআর/এএসএম