ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ইউনুছ আলী আকন্দকে হাইকোর্ট

১৮ কোটি মানুষের যাতে লাভ হবে সেগুলো নিয়ে আসবেন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৪৪ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

বর্তমানে জনস্বার্থের মামলার সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘বর্তমানে যারা জনস্বার্থে মামলা করেন, তারা জনস্বার্থের পরিবর্তে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে নিজের স্বার্থে রিট দায়ের করে থাকেন। কতিপয় ব্যক্তি প্রচারে ব্যস্ত থাকেন। প্রকৃত জনস্বার্থে মামলাগুলো আদালতে উপস্থাপিত হয় না।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল স্থগিতের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে ঘোষিত আদেশে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

কে জনস্বার্থে মামলা নিয়ে আসতে পারবে, কে আসতে পারবে না- এ সংক্রান্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বনাম আবু সাঈদ খান মামলার রায়ের নির্দেশনাগুলো উল্লেখ করে আদালত বলেন, ‘জনস্বার্থের মামলার যেমন সুবিধা আছে, তেমনি এর অসুবিধাও আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জনস্বার্থের মামলাগুলোতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি দেখা দেয়। অনেকেই এক প্রকার জুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিজমে ব্যস্ত থাকেন। আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে এসেছেন, মানুষ আপনার ওপর ভরসা করেন।’

তখন আইনজীবী বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষ আমাকে লাইক করেন।’

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদেশ দেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণ শেষে রিটটি সরাসরি খারিজ (সামারিলি রিজেক্ট) করে দেন আদালত।

এসময় হাইকোর্ট রিটকারী আইনজীবীকে বলেন, ‘এসব মামলা নিয়ে আর আসবেন না। ১৮ কোটি মানুষের যেগুলোতে উপকার হবে, সেসব বিষয় নিয়ে আসবেন। কোনো ভেস্টেড কোয়ার্টারের (স্বার্থান্বেষী মহল) উদ্দেশ্য থেকে মামলা করবেন না। আপনার অনেক প্র্যাকটিস। আপনাকে অনুরোধ করি।’

আরও পড়ুন>> তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

গত ২৯ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা নিয়ে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জনস্বার্থে ওই রিট করেন। রিটের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়। পর্যবেক্ষণ আদালত বলেন ভারত উপমহাদেশে ১৮৩০ সালে ভোট গ্রহণ পদ্ধতি শুরু হয়।

আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, সংসদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) রিটে বিবাদী করা হয়।

আদেশের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, ‘রিট খারিজ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল বৈধ ও বহাল রইলো। অর্থাৎ ঘোষিত তফসিল সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুসারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম যথারীতি চলবে।’

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষ হয়। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ আরও শুনানি করেন। আর রিটকারী আইনজীবীকে সেটি লিখিতভাবে জমা দেন। ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ বিষয়ে এ দিন ধার্য করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।

রিট আবেদনে জাতীয় সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় গত ১৫ নভেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। রুল শুনানি বা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগের নিয়মে অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের আদেশও চাওয়া হয়েছে।

সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদনের কথা বলা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে এ রিট করেন ইউনুছ আলী আকন্দ।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ৩০ নভেম্বর।

এফএইচ/ইএ/এএসএম