ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ

ইউটিউব, ফেসবুক লাইভে বক্তব্যের দায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৩

ব্যক্তিগত ইউটিউভ চ্যানেল খোলে কিংবা ফেসবুক লাইভে টক শো বা আলোচনা অনুষ্ঠানে কোনো অতিথির বিরুপ মন্তব্য সঞ্চালক-মালিকসহ এর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুই মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এ সময় আপিল আদালত বলেন, আপনি টক শোতে ইন্টারভিউর জন্য কাউকে ডাকলে তিনি যা বলবেন তার দায়িত্ব কেনো নেবেন না। সেই সঙ্গে আপিল বিভাগ জানান, যে বক্তব্যের জন্য এ মামলা সেখানে খাদিজা কিছু বোঝেনা এটা বলা ঠিক না কারণ সে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

শুনানিতে আদালত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের টক শোতে উপস্থাপক-আলোচকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বলেছেন বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

আরও পড়ুন> জবি ছাত্রী খাদিজার জামিন নিয়ে শুনানি মুলতবি 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিষয়ে শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ খাদিজার জামিন স্ট্যান্ডওভার (মূলতবি) রাখেন।

আপিল বিভাগের দেওয়া এই আদেশের ফলে খাদিজার জামিন চার মাস স্থগিত থাকছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

আদালতে আজ খাদিজার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন চেম্বারজজ আদালত।

অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালে অক্টোবরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানা পুলিশের করা মামলায় গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার পর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।

দুই মামলায় বিচারিক আদালতে কয়েক দফায় খাদিজার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হবার পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি খাদিজাতুল কুবরাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগে।

একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন। দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মুঠোফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।

নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মুঠোফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।

এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস