ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

হাইকোর্টে জামিন পেলেন ডা. সাবরিনা, মুক্তিতে বাধা নেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ০৫ জুন ২০২৩

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে ভুয়া রিপোর্টের প্রতারণার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আলোচিত জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর কোন মামলা না থাকায় এ আদেশের ফলে সাবরিনার মুক্তিতে আর কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসদুল হক।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে্ এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

আইনজীবী মাসুদুল হক জানান, এ মামলায় দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। বাকি মামলাগুলোতেও তিনি জামিনে আছেন। আজকে জামিন পাওয়ায় ডা. সাবরিনার মুক্তিতে বাধা নেই।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী জানান, এর আগে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আপিল করেছিলেন ডা. সাবরিনা। সেই আপিলের শুনানি নিয়ে গত ৯ মে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত জামিন শুনানি মুলতবি করেছিলেন আদালত। কিন্তু ডা. সাবরিনার আইনজীবী হজে চলে যাবেন মর্মে আজ জামিন আবেদনের শুনানি হয়েছে।

২০২০ সালের ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সাবরিনার স্বামী আরিফুল চৌধুরীসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। 

জানা যায়, জেকেজির কর্ণধার আরিফুল-সাবরিনা দম্পতি করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি নিতেন ১০০ ডলার।

২০২০ সালের ১২ জুলাই সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে আনা হয়। জেকেজির বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে তেজগাঁও থানায় আগেই আরিফুলের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

একই বছরের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক লিয়াকত আলী। ওই বছরের ২০ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।

করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে সাবরিনা আছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়।

২০২১ সালে সাবরিনা ও আরিফুলসহ আটজনকে তিনটি পৃথক অভিযোগে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন।

রায়ে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রত্যেককে তিন বছর কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড, দণ্ডবিধির ৪৬৬ ধারায় প্রত্যেককে চার বছর কারাদণ্ড ও চার হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে চার মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৪৭১ ধারায় প্রত্যেককে চার বছর কারাদণ্ড ও চার হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

তিনটি ধারার সাজা পরপর কার্যকর হবে মর্মে রায়ে বলা হয়েছে। ফলে আসামিদের ১১ বছর সাজাই খাটতে হবে বলে জানান মামলার আইনজীবীরা। 

এ মামলায় সাবরিনা-আরিফুল ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।

নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে আপিল করে জামিন না পেয়ে পরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ডা. সাবরিনা।

এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম