ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

হাইকোর্টে সাজা বহাল

আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন বিএনপি নেতা টুকু-আমান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ৩০ মে ২০২৩

বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের সাজা বহালের এ রায়ের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন তারা। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন তারা। মঙ্গলবার (৩০ মে) রায় ঘোষণার পর পৃথক প্রতিক্রিয়ায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ টুকু, আমান ও সাবেরার সাজা বহালের এ রায় দেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা পৃথক মামলায় টুকু ও আমান দম্পতির এ সাজা হয়েছে।

রায় হাতে পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে এর মধ্যে রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পেলে আপিল আবেদন করার সুযোগ রয়েছে তাদের।

রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। অন্যদিকে আমানউল্লাহ আমানের ১৩ বছর এবং তার স্ত্রী সাবেরা আমানের তিন বছরের দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> টুকু-আমানের আপিল খারিজ, সাজা বহাল

রায়ের পর আমান দম্পতির আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমানউল্লাহ আমান সম্পদের কোনো তথ্যই গোপন করেননি। যেসব সম্পদের বিবরণ দুদকে দেওয়া হয়েছে, সেসব সম্পদের কর দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, আমান খালাস পাবেন। কারণ এ আদালতেই মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। এ মামলার শুনানিতে মায়ার মামলার উদাহরণ এবং নজিরও দেখিয়েছি। কিন্তু আদালত বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ রায়ে আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী ন্যায়বিচার না পাওয়ায় সংক্ষুব্ধ। তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। রায়ের অনুলিপি পেলে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়া হবে।’

অন্যদিকে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর আইনজীবী সাইফুল্লাহ মামুন বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রায় বিচারিক আদালত গ্রহণ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তা করে জামিন চাওয়া হবে। তবে আমার মক্কেল মনে করছেন, উচ্চ আদালতের রায়ে তিনি ন্যায়বিচার পাননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘বিচারিক আদালত হাইকোর্টের রায় গ্রহণ করার দিন থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে দণ্ডিতদের বিচারকি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’

ইকবাল হাসান টুকুর বিরুদ্ধে মামলা ও রায়
মামলার বিবরণে জানা যায়, চার কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী ২০০৭ সালের মার্চে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করেন।

কমিশনের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ওই বছর ২৮ জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন টুকু। পরে ওই আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

আমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা-সাজা
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল করে হাইকোর্টকে মামলার আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।

এফএইচ/এএএইচ/এএসএম