ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ই-অরেঞ্জের পরিচালককে কনডেম থেকে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৫২ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

মানি লন্ডারিং মামলায় ই-অরেঞ্জের প্রধান পরিচালক আমান উল্লাহ চৌধুরীকে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে, আসামির করা অভিযোগের ব্যাপারে দুদক ও জেলা গাজীপুরের ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুসন্ধান এবং রিটকারীর দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন আদালত। এছাড়া এসব বিষয়ে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর ২ মে শুনানি হতে পারে।

বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন: ভাই-চাচাকে নিয়ে ই-অরেঞ্জ থেকে ১৮ কোটি টাকা সরিয়েছেন সোনিয়া

আদালতে এদিন রিট পিটিশনারের পক্ষ শুনানি করেন আইনজীবী আবুল মতিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

আমিন উদ্দিন মানিক জাগো নিউজকে বলেন, মানি লন্ডারিং মামলার আসামি আমান উল্লাহ চৌধুরীকে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে রাখা ও ঘুস দাবির অভিযোগ এনে জেল সুপারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আসামির স্ত্রী নুসরাত জাহান। সেই রিটের শুনানি শেষে রুল জারি করেন আদালত।

আদালত আসামিকে কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ দেন। আর গাজীপুরের দুদক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আসামির স্ত্রীর অভিযোগ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন আদালত।

এর আগে আমান উল্লাহ চৌধুরীকে কনডেম সেলে রাখা ও ঘুস দাবির অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট জেল সুপারের বিষয়ে অনুসন্ধান ও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন নুসরাত জাহান।

আরও পড়ুন: জেল সুপারের বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জ পরিচালকের রিট

২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্লাহ চৌধুরী।

ওইদিন পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২৩ আগস্ট মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সোনিয়া দম্পতিসহ তিনজনের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একই বছরের ৬ আগস্ট ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন তাহেরুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী। মামলায় তিনি ই-অরেঞ্জের পাঁচ কর্মকর্তাসহ সব মালিককে আসামি করেন।

আরও পড়ুন: টাকা চাইলে ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের হুমকি দিতেন পুলিশ পরিদর্শক সোহেল

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২৮ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়, যা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ই-অরেঞ্জ কোম্পানির ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল। এ শর্তেও বারবার নোটিশের নামে ভুক্তভোগীদের পণ্য ডেলিভারি না করে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা ই-অরেঞ্জের অফিসে গিয়ে ডেলিভারি দেওয়ার কথা বললে অফিসে কর্মরত কর্মকর্তারা ও মালিকপক্ষ জানান, কিছুদিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো পণ্য ডেলিভারি না করে এক লাখ ভুক্তভোগীর প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেছে।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, করোনাকালে ভুক্তভোগীদের কষ্টার্জিত অর্থের নিশ্চয়তা না দিয়ে ই-অরেঞ্জ তাদের মালিকানা পরিবর্তনের নামে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে। নতুন মালিক ও পুরোনো মালিকের কোনো তথ্য ভুক্তভোগীদের সামনে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এছাড়া আসামিরা সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে অর্ডার নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের ১৬ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীরা। সেই টাকা ও পণ্যের দাবিতে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। আর মানি লন্ডারিংয়ের মামলাটির এখনো তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী।

এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস