বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকাভুক্তি নিয়ে রুলের লিখিত আদেশ প্রকাশ
দেশে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা যাচাই করতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে সার্চ কমিটি কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল বিষয়ে লিখিত আদেশ প্রকাশ করা হয়েছে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) আদেশের লিখিত অনুলিপিটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. বাকীর হোসেন মৃধা।
এর আগে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা যাচাইয়ের পাশাপাশি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঢাকার আরবান গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুনের দুঃসাহসিক সদস্য সৈয়দ হাফিজুর রহমানের নাম তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের জন্য রুল জারি করেন আদালত।
এ বিষয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানির নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রুলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় শহীদ সৈয়দ হাফিজুর রহমানের নাম তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব খুঁজে বের করতে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী কাউন্সিল গঠনে নিষ্ক্রিয়তা কেন স্বেচ্ছাচারী, অসৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুক) মহাপরিচালক (ডিজি), মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল বাশার। রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী মো. বাকীর হোসেন মৃধা। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. খোন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হুদা ও মাহাথীর মোহাম্মদ রাতুল।
একই দিন আইনজীবী বাকীর হোসেন মৃধা জানান, স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্র্যাক প্লাটুনের দুঃসাহসিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সৈয়দ হাফিজুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া কেবল দুঃখজনকই নয়, লজ্জারও। মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকার ক্র্যাক প্লাটুনের একাধিক চরম ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। ঢাকায় এক রাতে সফলভাবে ছয়টি স্থানে মাইন বিস্ফোরণে অসামান্য কৃতিত্ব আছে হাফিজুর রহমানের।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্রের দশম খণ্ডে উল্লেখ আছে এই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার কৃতিত্ব। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর সৈয়দ হাফিজুর রহমানের ছোট ভাই সৈয়দ মোসাদ্দেকুর রহমান ভাইয়ের স্বীকৃতি ও নাম অন্তর্ভুক্তি চেয়ে মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তাই ওই আবেদনটি যুক্ত করে জনস্বার্থে রিট করা হয়। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।
গত বছরের অক্টোবরে সৈয়দ হাফিজুর রহমানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। ‘হাফ এ সেঞ্চুরি গন/চেসিং রিকগনিশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য হাফিজুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা আটবার আবেদন করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম