১২ বছরে কাতারে হতাহত শ্রমিকের তালিকা নিরূপণের আদেশ স্থগিত
কাতারে শেষ হওয়া ফুটবল বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামসহ বড় সব স্থাপনা ও উন্নয়নকাজে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি শ্রমিক হতাহত হয়েছেন তা নিরূপণে পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত।
পাশাপাশি ৬ মার্চ শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণলায়কে হতাহতদের এ তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছিল।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহীমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটকারী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান।
তিনি বলেন, কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামসহ বড় সব স্থাপনা ও উন্নয়নকাজে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি শ্রমিক হতাহত হয়েছেন, তা নিরূপণ করার পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এ বিষয়ে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন>>কাতারে স্টেডিয়াম তৈরির সময় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে রুল
জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের এক আইজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন।
বাংলাদেশি শ্রমিক হতাহত হয়েছেন, তা নিরূপণ করার পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে পররাষ্ট্রসচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রুলে বিশ্বকাপ উপলক্ষে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কাতারে ১১টি স্টেডিয়াম, রাস্তা, হোটেল ও অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণকাজে যুক্ত অভিবাসী বাংলাদেশি নির্মাণশ্রমিকের তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপকেন্দ্রিক নির্মাণকাজে সাড়ে ৪০০ অভিবাসী নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যুর যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি হলে এর মধ্যে বাংলাদেশের কতজন নির্মাণশ্রমিক রয়েছেন, সে তথ্য সংগ্রহ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চান হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন>>কাতারে প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আইএলও’র প্রশ্ন
এছাড়া কাতার বিশ্বকাপকেন্দ্রিক বিভিন্ন নির্মাণকাজ করতে গিয়ে অভিবাসী বাংলাদেশি নির্মাণশ্রমিক হাতহত হয়ে থাকলে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পররাষ্ট্রসচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন প্রধান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টেরিয়র) ও শ্রমমন্ত্রীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তান বাদে ৪টি দেশে গার্ডিয়ানের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দেশগুলোর সরকারি হিসাবই বলছে, ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯২৭ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ১ হাজার ১৮ জন। কাতারে পাকিস্তানের দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে ৮২৪ জন পাকিস্তানি শ্রমিক মারা গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশে।
এফএইচ/ইএ/জেআইএম
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ গুলশানে গুলির ঘটনা ঘটেনি, ফুটেজ দেখার অনুরোধ সাবেক ওসি মাজহারের
- ২ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- ৩ ‘জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট কিলিং করা হচ্ছে’
- ৪ বেনজীর ও মতিউর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলার প্রতিবেদন ১১ মার্চ
- ৫ আদালত-বিচারকের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা, জানতে চেয়ে চিঠি