২২ নৌ কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল অবৈধ: হাইকোর্ট
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের গেজেটভুক্ত ২২ জন নৌ কমান্ডোকে বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাচাই-বাছাই করে গেজেট প্রকাশের পর তা আর বাতিল করতে পারবে না জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
আদালতে ২২ জন নৌ কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পক্ষে করা রিটের রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু বিষয়টি জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে এদিন রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু।
রিট আবেদনের বিষয়ে তৌফিক ইনাম টিপু জানান, ২০০৩ সালে সরকার গঠিত সাত সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই কমিটি ৪৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন করে।
ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে পরে ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রিট আবেদনকারী ২২ জন নৌ কমান্ডোকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হিসেবে গেজেটভুক্ত করে এবং স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয় ভাতা দিয়ে আসছে। কিন্তু ওই নৌ-কমান্ডো মুক্তিযোদ্ধাদের আবারও যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জন রিট আবেদনকারীসহ ২৪ জন নৌ কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল (৩৫তম সভায়) জামুকা একটি সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে ২২ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রিট করে। রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৯ মে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আবেদনকারীসহ ২৪ নৌ কমান্ডোকে বীর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি জামুকার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন আদালত।
ওই রুলের শুনানি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৩৫তম সভার সংশ্লিষ্ট ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।
তৌফিক ইনাম টিপু জানান, হাইকোর্ট এ রায়ে উল্লেখ করেছেন, গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাব-কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে তাদের গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার জামুকার নেই। এটি সরকার ও মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
রিট আবেদনকারীরা হলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রামপুরা গ্রামের মো. আব্দুল হান্নান সরকার, রামচন্দ্রপুরের মো. বাহার উদ্দিন, রামপুরার মো. এন্তাজ আলী, মো. গোলাম মোস্তফা, মো. সাইদুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ শেখ, মো. ফয়জার রহমান, মো. শরীফ উদ্দিনের স্ত্রী সকিনা বেগম, জিন্নাত আলীর স্ত্রী মজিদা বেগম, আফতাব উদ্দিনের ছেলে মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম, করিম বক্সের ছেলে মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী আয়েশা বেগম, আমিনুল ইসলাম, বিনয় কুমার সরকার, আব্দুল গাফফারের স্ত্রী হামিদা বেগম, আশরাফুল আজাদ, গোলাম হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম, শামসুল হক, মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. জুয়েল সরকার, বজলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন প্রধানের স্ত্রী নুর বেগম ও মো.হারুন অর রশিদ।
এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস