ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ডিগ্রি কলেজে সভাপতি মনোনয়নে ভিসির ক্ষমতা নিয়ে রুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত কলেজগুলোর (ডিগ্রি কলেজের) গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে দেশের ডিগ্রি কলেজগুলোর গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়ন এবং প্রত্যাহারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নিরঙ্কুশ ক্ষমতা কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ভিসির এডহক কমিটি পুনর্গঠনের ক্ষমতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে হবে।

রংপুর জেলার পীরগাছা মহিলা কলেজের এক ছাত্রের অভিভাবক মো. রফিকুল ইসলামের দায়ের করা এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার(১৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ রুল জারি করেন।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আওলাদ হোসেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, ২০১৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি ডিগ্রি কলেজগুলোর গভর্নিং বডি গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪৫ অনুসারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গভর্নিং বডি (সংশোধিত) সংবিধি, ২০১৯ জারি করা হয়।

ওই সংবিধির বিধি-৭ এ বলা হয়, গভর্নিং বডির সভাপতি বা কোনো সদস্য পদে মনোনয়ন দানে মনোনয়ন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের অর্থাৎ ভাইস-চ্যান্সেলরের নিরঙ্কুশ এখতিয়ার থাকবে। এভাবে মনোনয়নদানকারী কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যক্তিকে মনোনীত করার পর যে কোনো সময়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং নতুন মনোনয়ন দিতে পারবে।

কোনো ব্যক্তি একটি কলেজের গভর্নিং বডিতে একাধিক মনোনয়নদানকারী কর্তৃপক্ষরে কাছে থেকে মনোনয়ন লাভ করতে পারবেন না বা একাধিক ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত/মনোনীত হতে পারবেন না। বিধি ৬(ঘ)-তে বলা হয়, এডহক কমিটি নির্ধারিত মেয়াদ ৬ (ছয়) মাস অতিক্রান্ত হলে তার কার্যকাল হারাবে। তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ অবস্থায় ভাইস-চ্যান্সেলর এডহক কমিটির মেয়াদ সর্বাধিক ৬ (ছয়) মাসের জন্য বাড়াতে পারবে। বর্ধিত সময়ের মধ্যে গভর্নিং বডি গঠনে ব্যর্থ হলে ভাইস-চ্যান্সেলর এডহক কমিটি পুর্নগঠন করতে পারবে।

ওই সংবিধি, ২০১৯-এর ৭ এবং ৬ (ঘ) বিধিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ডিগ্রি কলেজগুলোর গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়নদান এবং প্রত্যাহারের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো কার্যকলাপ সম্পূর্ণ করার সময় নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হতে পারেন না। যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় থাকতে হয়।

কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বিধি-৭ এর অপব্যবহার করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ডিগ্রি কলেজগুলোর কমিটি নিজের ইচ্ছা মাফিক গঠন করে আসছেন।

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আরও জানান, পীরগাছা মহিলা কলেজে সভাপিত পদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের পছন্দের ব্যক্তি আবু নাসের মাহবুবুর রহমানকে দীর্ঘ ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি প্রথমে ২০১২ সালের ১২ নভেম্বর মনোনয়ন পেয়ে ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এরপর ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আবারও দায়িত্ব পালন করেন। এর পরে এসে ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আবারও ছয় মাসের জন্যে দায়িত্ব পান। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে আবারও তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর পরে রিটে ওই কমিটি বাতিল চাওয়া হয়েছে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারির এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এফএইচ/জেডএইচ/কেএসআর/এমএস